দক্ষিনের ঘরের বারান্দাটাতে বসে আছি
আজ বড্ড গরম, সন্ধে হচ্ছে একটু হাওয়া দিলে বাঁচি
হটাত করে এক ঝলক ভিজে বাতাস এসে লাগ্ল গায়ে
সেই ছোট্ট বেলার একটা ঘটনা ভেসে উঠলো স্মৃতির পথ বেয়ে
চোখটা বন্ধ করে কখন জানিনা চলে গেছি সেই তরুণী বয়সে
সেই শ্যাম পুকুরের বাড়ির ছাদে আমরা সব বন্ধুরা আছি বসে
গীতার পছন্দ ছিল বরুনদাকে কিন্তু বলার ছিলনা ক্ষমতা
তাই ছাদের উপর থেকেই দেখত বরুনদা কে অফিস ফেরতা
সেদিনটাও একই ভাবে আমরা ছিলাম ছাদের উপরে
সুন্দর একটা মন ভরান বাতাস দিচ্ছে মা ধুপ দিচ্ছেন ঠাকুর ঘরে
ছাদের পাঁচিলের ধারে দারিয়ে আমি গুন গুন করছি একটা ভজন
বরুন দা আজকে লেট করছে গীতার টেনশান হাসছে বাকি দুজন
ভাবতে ভাবতেই বরুন দাকে দেখা গেল, বরুন দা মুখ তুলে তাকাল
হেই গীতা কেমন আছ, ছোটন কে একবার আমাদের বারিতে আসতে বোলো
এই প্রথম বরুন দা গীতার সাথে কথা বলল, গীতা কে আর দেখে কে
মুখ চোখে খুশি ঝল্কে পরছে আনন্দে মিতুর হাত ধরে ছাদের উপরে ঘুরতে থাকে
শাঁখের আওয়াজে চোখ খুলে দেখি সন্ধে হয়ে গেছে, শরীর টা বেশ ফুরফুরে লাগছে
মনটা এখনও শ্যাম পুকুরের বারিতে, সেই সব দিনের কথা বড্ড মনে পরছে
সেই মন ই বলল , আ মরন , ৭৫ এ ভীমরতি ধরেছে কচি হওয়ার সাধ জেগেছে
সেই মন ই উত্তর দিল, বয়স হয়েছে তো কি মন টা তো এখনও তরুণীই আছে
মানুষ আজ চাঁদে জাচ্ছে, দুনিয়া টাও আজ অনেকটাই বদলে গেছে
কিন্তু বৃদ্ধ মানুষের মন বোঝার চেষ্ঠাটাই যেন আজকাল হারিয়ে গেছে
ওরা বোঝেণা , ওদের আজ ৪০/৫০ বছর বয়স , রোজ কতো স্বপ্ন দেখছে
ঘুরে বেড়াচ্ছে, খাচ্ছেদাচ্ছে আনন্দ করছে, দেখে আমারও ভাল লাগছে
অনেক ইচ্ছাই পূরণ করছে যা ওরা ছোটো বেলায়ে করতে পারেনি
কষ্ট এটাই যে আমারও যে ইচ্ছে করে এটা ওরা বোঝার চেষ্ঠাও করেনি
মণের কথা কাকে বলি সবাই গ্যান দেয়ে, বলে দুদিন বাদে ঘাটে যাবে এখনও এত ইচ্ছা
এত পড়াশুনো করেছিস কি করতে, যদি এটাই না বুঝিস যত দিন ইচ্ছা ততদিনই বাঁচা
মাঝে মাঝে মন চায়ে সব ছেরে এই বন্দি দশার থেকে মুক্তি নিয়ে পালাই
মনের যা বাকি ইচ্ছা গুলো অপুরন আছে, সেগুলোকে পূরণ করে সকল কে জানাই
বাঁচার মানে দিন গোনা নয়ে , বন্দি হয়ে কিছু বেশী দিন বেঁচে দিনগত পাপক্ষয়ে নয়ে
বাচার মানে হল সপ্ন পূরণ, সে যে বয়সেই হোক, যাতে মৃত্যুর সময়ে মনে কষ্ট না হয়ে
বাচ্ছাদের কাছে বাবা মা বটের ছায়ার মত, তাই ওরা বাবা মা হারাতে ভয় পায়ে
কিন্তু এটা বোঝেনা, বাবা মা চিরকাল থাকে না, তাদের সপ্ন পূরণ করলেই ভগবান আশীর্বাদ দেয়।