কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ শেষ ,
চারিদিকে শত-সহস্র প্রাণের ধ্বংসাবশেষ ।
নিঃশব্দ রথের ঘর্ঘর , ধনুকের টঙ্কার ;
দুর থেকে ভেসে আসে ইন্দ্রপ্রস্থের পথে পথে -
পান্ডবদের জয়জয়কার ।
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্র জুড়ে ,
ক্ষতবিক্ষত ছিন্নভিন্ন শবের পাহাড় ।
বিশাল ময়দান নিঃশব্দ শ্মশান , নিঃস্তব্ধ নিশ্বাস ;
একেলা অসহায়া গান্ধারী খুঁজে ফেরে শবের পাহাড়ে -
তার নিহত শতপুত্রের শবাশেষ ।
লোভী সারমেয়র দল উলঙ্গ উল্লাসে জুড়েছে চীৎকার ,
তার সাথে মিশে যায় , শতপুত্র আর সহস্র স্বপ্ন হারিয়ে ;
কৌরবমাতা গান্ধারীর বুকফাটা সুতীব্র হাহাকার ।
দিনের নিষ্ফলা লড়াই শেষে রোজ ভাবি ,
শত-সহস্র স্বপ্নের শব বুকে নিয়ে -
আমরা সবাইতো সন্তানহারা গান্ধারী ।
বেঁচে থাকার রণক্ষেত্রে -
কুরুক্ষেত্রের পুনরাবৃত্তি হয় প্রতিদিন ;
আমাদের স্বপ্নগুলোর অকাল হত্যাকাহিনীর মহাভারত -
রচিত হয় বারংবার ।
ফরিয়াদ নির্বিচার , নিয়তি নির্বিকার ;
মহাকালের উদ্ধত প্রশ্ন -
এমন কুলাঙ্গার স্বপ্ন দেখার ,কি আছে অধিকার ?
আমাদের বুকের পাঁজরে-
দিবারাত্র নিঃশব্দে মাথা কুটে মরে ;
শত স্বপ্নের লাশ বুকে নিয়ে ,
স্বপ্নহারা উন্মাদিনী গান্ধারীর নিরুপায় হাহাকার ।
( নিবেদন: এই অকবিতাটির ছোট্ট ইতিহাস আছে । প্রায় দশ বছর আগে রাতের ট্রেনে যাত্রার সময়ে , হঠাত্ একটি ম্যাগাজিনের পিছনের পাতায় এইরকম ভাবনার একটা কবিতা লিখে ফেলি । সকালে নামার সময়ে ম্যাগাজিনটা ট্রেনে ফেলে যাই । খুব দুঃখ হয়েছিল অনাথ কবিতাটির জন্যে ।আজ সেই ভাবনার স্মৃতির পাতা থেকে অনাথ কবিতাটাকে উদ্ধার করে পিতৃপরিচয় ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলাম - একদম হিন্দি ফিল্মের মত । সকলের ভাল লাগলে খুশি হবো ।)
- অকবি -