সেদিন রাতে স্টেশনে নেমে ,
পা বাড়িয়েছি ঘরের পথে ;
শুনতে পেলাম তীব্র আর্তনাদ ।
লাইনের ওপারে একটা আলোড়ন ,
দুটো ছেলে একটা মেয়েকে পাঁজাকোলা করে ,
নিয়ে যাচ্ছে অন্ধকারের রাজ্যে ।
আমি ডাকলাম আশেপাশের কিছু মানুষকে ,
কেউ এলো না , কেউ শুনলো না ।
আমি এগোলাম দু-চার পা ,
এক টিঙটিঙে মস্তান পিস্তল ওঠালো বুক বরাবর ,
বলল "থাম হারামি ,
আরেকটু এগোলেই প্রাণ হারাবি " ।
আমি থমকে গেলাম , ভয় পেলাম ।
পরের দিন সংবাদে হেডলাইনে দেখলাম ,
সেই মেয়েটি ধর্ষিতা -
ছিন্নভিন্ন শরীর নিয়ে মৃতা আরেক নির্ভয়া ।


আমার শিরদাঁড়া বেয়ে ,
একমুঠো বরফ-শীতল হিমবাহ ;
বুকের মাঝে ভীত লজ্জার চোরাস্রোত ।
উদভ্রান্ত বিস্ময় আর বিভ্রান্ত জিজ্ঞাসা নিয়ে -
সওয়াল করি আমাকে ,
ঐ সাদা কাপড়ে মোড়া নির্ভয়া যদি
আমার মামণি হত ?
আমার আত্মাকে ,
শরীরের বাইরে দাঁড় করিয়ে -
চাবকালাম ছপাৎ ছপাৎ অনেকবার ।
আমার নপুংসক কাপুরুষ বিবেকটাকে ,
প্রশ্নের পর প্রশ্ন করলাম বারংবার -
কেন শিরদাঁড়াটা সরিসৃপ হল  ,সেদিন একটিবার ?


এখনো যেদিন রাতের ট্রেনে স্টেশনে নামি ,
খুঁজি চারপাশ -
যদি আরেকবার সুযোগ পাই ;
কাপুরুষ বিবেকটাকে চাবুক মেরে জাগিয়ে তুলে ,
শিরদাঁড়াটা সোজা করে -
সরিসৃপ থেকে মানুষ হই ।।
                             - অকবি -