হাবুল মাষ্টর পড়াইত
অ এ অজগর আইসছে তাইড়ে
আ এ আমটি খাব পাইড়ে
আইজ সি হাবুল মাষ্টরও নাই
সি সহজ পাঠটাও উইঠে গেছে,
কি আর বইলব আইজ্ঞা
ইখন সি পাঠশালাটাই নাই।
ইখন গাঁয়েই বল আর শহুরেই বল
আঁন্ধে পিঁন্ধে কুড়কুইড়া ছাতুর পারা
গজাই গেছে ইংরাজী শিখার বিলাতী ইস্কুল ।
নামেই বিলাতী, ভিতরে খড়গুঁজা
দশ লাখ পন্দরো লাখ ঘুঁষ দিতে না
পারা লিখাপড়া বেকার ছিল্যামেইয়্যাদের
হাতখরচার পৈসা দিয়েই মালিকরা
লাখ লাখ টেকা কামাই লিছে।
তা কামাইছে কামাক, হামদের কি !
যাদের পৈসা আছে তারা ছিল্যাপুইল্যা
লাতিপুতিদের পড়াক ন বিলাতী ইস্কুলে !
হামদের লাইগে থাকুক ন বাংলা ইস্কুল
মায়ের ভাষার উপরে কন ভাষা আছে?
লাল মলাটের বন্নপরিচয়ের চাইয়ে কন
ভাল কিতাব আছে ? হামার জানা নাই।
হামরা একে চন্দ দু”য়ে পক্ষতেই সড়গড়
কি দরকার ওয়ান টু থিরি ফোরের বাহার
দুহেরই তো গুনতি করার লাইগেই ছিষ্টি।
শুনলি ছাত্তর হছে নাই বইলে বাংলা
ইস্কুল উইঠে যাছে, তো বাপ যিখানে
ছাত্তর আছে সিখানে মাষ্টর নাই কেনে?
সি সব লয়, ইগুইলা হছে তুদের বাহানা।
গরীব ভুখারা যেমন আনপঢ় আছে থাক
টিপছাপ দিয়ে ফকটের পৈসা পাছে পাক
ভোটে তুদের চিহ্নে ছাপ্পাটা পড়লেই হবেক।


আইজকাল দেখছি চাদ্দিকে একুইশ্যা মানানোর
হিড়িক লাইগেছে, ই যেমন জীয়ন্তকালে খাইতে
পইরতে না দিয়া মরা মায়ের শেরাদ্ধে পাড়ার
লোককে হালুয়া পুলাও খাওয়ায়ে পেরাশ্চিত্ত করা ।
হামদের মায়ের ভাষাটোকে বেআদর কইরে কইরে
বাংলা পড়ানো ইস্কুলগুল্যানকে টুঁটি চিপে মাইরে
বাংলা পড়া বেকারদের বছরের পর বছর
কইলকাতার রাস্তায় গরু ছাগলের মতন পাইলে
সরকারি কাগজ পত্তরে বাংলাকে পাত্তা না দিয়ে
পরীক্ষার প্রশ্ন পত্তরে বাংলাকে দুঃচ্ছাই কইরে
ভাষা পরবে বড় বড় বুলি আওড়াস কি কইরে?
ইখন তুদের একুইশ্যার কন জান নাই রে !


মায়ের ভাষা সবলে খাসা, ই ভাষাতেই হামদের
কলিজা ধুকপুক করে, হামদের ভাবনা চিন্তা স্বপুন
সব ই ভাষাতেই, ই ভাষাতেই পরথম মা বললি,
সি ভাষাটোকে মাইরে ফেলার ফন্দি আঁইটেছিস?
হাবুল মাষ্টর, সহজপাঠ, বন্নপরিচয়, ধারাপাত
মুদের মনে যেমন গাইড়েছিল তেমনেই আছে,
বিলাতি ভাষা দিয়ে উটা উখড়ান যাবেক নাই।