হঠাৎ কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেছে,
ভেজা মাটি, ভেজা পাতায় জংলা গন্ধ ।
অকাল বর্ষনে রাস্তাঘাট প্রায় জনমানবহীণ,
কলেজ সেরে সেদিনও বাড়ি ফিরছিল মেয়েটা,
ভেড়ির ধারে বড় পাঁচিলের আড়ালে ওরা লুকিয়ে ।
কাছে আসতেই কয়েকটা পুরুষ্ট লোমশ হাত
জাপটে ধরল ওর নিষ্পাপ শরীর, মুখ, সর্বাঙ্গ,
টানতে টানতে নিয়ে গেল ভেড়ির ধারের ধানক্ষেতে
ওদের চোখে তখন শিকার ধরার বীভৎস উল্লাস
ছিঁড়ে, খুঁড়ে খেল ওর যৌবন, ওর নারীত্বকে,
পৈশাচিক বর্বরতায় শ্বাসরোধ করে মারল মেয়েটাকে ।
বোবা কান্নায় দুলে উঠল পাকা ধানের শীষ
অব্যক্ত যন্ত্রনায় কেঁপে ঊঠল ভেড়ির শান্ত জল ।


নির্জন ভেড়িতে এখন শুধু ঝিঁঝির কনসার্ট
নিথর শরীরটায় পাক দেয় শুধু বর্ষনসিক্ত হাওয়া
তীব্র মৃত্যুযন্ত্রনা নিয়েও ওর চোখে ছিল বাঁচার আর্তি
পৃথিবীর আলো, বাতাসের অধিকার চেয়ে আকুতি
প্রিয়জনদের ছেড়ে বিদায় নেবার প্রতি তীব্র অনীহা ।
মাটির কুঁড়েঘরে পথ চেয়ে থাকা দীনমজুর বাবা,
আজন্ম অভাবের কাজল পরা ওর আটপৌরে মা
মেয়েকে শিক্ষিত করে তোলার স্বপ্ন যাদের চোখে ।
ওদের প্রতীক্ষার অবসান হ'ল বুকফাটা আর্তনাদে
ঘরের মেয়ে ঘরে ফিরে এল লাশকাটা ঘর থেকে
বিধাতার বিচারে "নারী" হয়ে জন্মানোর শাস্তি পেয়ে ।
বোকা মেয়েটা শেষ মূহূর্তেও ভরসা রেখেছিল ঈশ্বরে
ব্যাগে রাখা চিরকুটে লেখা ছিল "ভগবান সহায়" ।