হেঁই প্যাপারবাবু, কন মন্তী-টন্তীকে বল্যে
হামদের ভগনাডিহির নামটো পাথ্যরাডিহি করে দেন’ন আজ্ঞা !
জয়চন্ডী পাহাড়ল্যে বিশ কোশ ধুরে থাক্যেও
গাঁ’টোর আগুত্যে পিছুত্যে, বুকের অন্দরে খালিই পাথর ।
বাইদে, বহালে, টাঁড়্যে, বাঁশ ঝাড়ে,
লকের বাখুল্যে, খামারে, গবরকুঁড়্যে
যিখানে খুঁজবেন সেখানেই খালি পাথর পুঁতা,
তিরঙা, লাল, সবুজ, গেইরা কত রকম রঙের ।


তবে বাবু মানছি ই আধমরা গাঁ’টোকে মাঝেমাঝেই ইঁড়ক্যে দেয়
হুঁই পাথর পুঁতা পরবটো । সিনিমার শুটিংএর পারা
গাড়ী হাঁকাই মন্তী, ল্যাতা, ফটয়ালা, কাগজয়ালা,
ফুলয়ালা, প্যান্ডেলয়ালা, মাইকয়ালা, কেটারিংয়ালা, মিঠাইয়ালা,
কে নাই আসে হামদের ই ভগনাডিহিতে ?
আদ্ধেক মাটিয়ে গাঢ়া লইত্যন কাপড়ে ঢাকা পসন্দের রঙ করা,
ইটা সিটা লেখা পাথরটোর কি কদর !
গরম লরম বক্তিমা দিহে লইত্যন কাপড়ে ঢাকা পাথরটোকে
ল্যাংটা করে দিতেই কী ফটাফট হাততালি !
কন কন শহুরা ছঁড়া আইজকাল মুহে সিটিও বাজায় ।
তবে জানি নাই বাপ উটা ল্যাংটা পাথরটো দেখে,
ন উমেশের বিটি লক্ষ্মী ন মকবুলের বিটি সাবিনাকে দেখে ।
হামরা অবিশ্যি উঁদের চইখ্যে চইখ্যে রাখি,
কনরকম ইদিক সিদিক করল্যে ঠ্যাং খঁড়া করে ঘরকে পাঠাব ন !
পাথর পুঁতার পর বাবুদের ফিষ্টিটো দেখার মতন ।
গাঁয়ের কঁচি ভ্যাড়া ছাগলগুল্যান ডবল দাম পায়
কত রকম বতল কত রঙের মদ বাপের জম্মে দেখি নাই ।
মৌজ মস্তি করে আবার মটর হাঁকাই হাওয়া ।


ই পাথর পুঁতা পরবটো আজক্যের লয় বাবু,
হামার বাপের মুহেও শুন্যেছি তখনও পাথর পুঁতত ।
কেনে যে বাপ উঁরা হামদের গাঁটোকেই পাথরের ডিপো বনাত্যে চায় কে জানে ?
গাঁয়ের পড়ালিখা লকে বলে কাঁসাই লদী, রেললাইন, বড়রাস্তার ধারে বল্যে ।
হামি ভাবি অন্য কথা । ইঠেনের মতন পাঁচ হাজার ভট কন গাঁয়ে আছে ?
দু’টো পেরাইমারি, একটো বড় ইস্কুল আর একটো পোষ্টাপিস
ইটো দেখাই কতদিন চলবেক ? তাই ভটের আগে পাথর পুঁতে চিঁড়া ভিজান ।
কখনও বলে ইঠেনে রেলের কারখেনা হবেক, কখনও বলে
সিমিটের কারখেনা, আবার কখনও বলে বিজলী তৈয়ারী হবেক ।
ভট পরব চুঁকে যাবার পরে বাপের জম্মে দেখল্যম নাই
একটা ইটা কিম্বা এক বস্তা সিমিট কারখেনার লাগ্যে গাঁয়ের মাটিতে পড়ল্য ।
কন কালে পুঁতা পাথরগুল্যান ভাঙে খিঁয়াই মাটিতে মিশে গেছে,
যিগুল্যা টিক্যে আছে সিগুল্যায় ইখন কুত্তায় ঠ্যাং তুল্যে পিস্সাব করে
নাইত ছুটু ছিল্যাদের শহুরা কমুড নাইত কিরকেটের উইকেট হয়ে গেছে ।
গাঁয়ের লক কন কনটাকে গরুর খুঁটা করে লিয়েছে, কেউ কেউ
উঁপড়াই লিয়ে পখুর ঘাটে লাগাইছে, কাপড় কাচত্যে সুবিস্তা ।


ইস্কুলের নাড়ু মাষ্টর বলে, পাথর পুঁততে যেতনা খরচা হয়েছে
উটা দিয়ে গাঁয়ে একটা বড় ইস্কুল, একটা কলিজ, একটো ধানকল
আর গটা বার সত্যিকারের জল পড়া টিউকল বঁসাই দিয়া যাথ্য ।
হেঁই বাবু, আপনারা’ত কলমের খঁচায় মানুষের মনে গাঢ়ে বসা পাথরকেও উঁখড়াই দেন,
হামদের ভগনাডিহির মাটিতে গাঢ়ে দিয়া ই পাথরগুল্যাকেউ উঁখড়াই দেখান’ন !
কমসে কম হামদের বুকের ধুকপুকানির মিঠা বোলটা শুনত্যে পাব
পাথর পুঁতা দেখত্যে দেখতে উটাও যে পাথ্যরা দিল বনে গেছে !