এমনটা সেদিন প্রথম হল
তেমনটাই কেন ভাবছ বল?
প্রত্যহ হলেও এমন কলহ
সত্যই সেদিন হল বাড়াবাড়ি;
সামান্য একটা পুরনো আলমারি
তার সে দামী কাঠ মেহগনি
ঠাট যে তার এখনও যায়নি
সে কথা সে মানতে চায়নি,
সে ছিল তখন প্রস্তর যুগ
এখন এসেছে ইস্পাতের সুখ
আলমারিটাই নাকি, কাটছে তার নাক;
‘দিয়ে দিলে যদি, নিয়ে যায় কেউ
মনেতে কমবে উচ্ছাসের ঢেউ
আর, কেউ না নিলে
ছুঁড়ে দাও ফেলে,
যাক না হয় তা, চুলোয় যাক’।

আমারও জেদ চাপল মনে
দুচোখ হায় যেদিকে চায় যাবই ক্ষণে
ফেলব না তা, পেয়েছি যা কি না
পিতৃকুলের উত্তরাধিকার বলে
শ্মশানেও টেনে অন্তিম লগনে
নিয়ে যাব হলে তেমন প্রয়োজনে
এমন কথা শুনে পিত্তি যায় জ্বলে
মনের দুঃখে চললেম নির্জনে
মাঠে ঘাটে হোক অথবা বনে।

কি হবে শুধুই বচসা করে
শেষে তাই এসে অনেক দূরে
ছিলেম বসে ঠাণ্ডা আবেশে
এক অশ্বত্থের মহীরুহ তলে
যেখানে ছিলনা একজনও বসে
সেখানেও হটাত জুটল কে এসে?

‘বাবু আমি বেচি সাধের মণিহারী,
নিয়ে যেতে পার কাঠের রেলগাড়ী
ছেলে খুশি হবে দেখে বাহারি
অথবা ঘরেতে থাকে যদি নারী
নিয়ে যেত পার কাঁচের চুড়ি’;
বিড়বিড় করে মনে মনে বলি
ধ্যাত, যত সব জুটেছে কাঙ্গালি
ছেলে তো কিনবে হাউই জাহাজ!
বিদেশে যাবে হয়েছে জাঁহাবাজ
আর বউ এর চাই সোনার গয়না
চদ্রহারের ধরেছে বায়না
এই গুলো নিয়ে ঢুকলে ঘরে
প্রাণটাই নেহাত যাবে বেঘোরে!

ধরতে পেরেই মনের ব্যথা
বলল সে তার বাড়ির কথা
‘না বাবু এরা ভাঙ্গে না বাসা
জুড়ে দেয় বরং ভেঙ্গে যাওয়া আশা;
আলোয় ভরিয়ে আমার ঘর
সারাদিন এগুলো বানায় বর
আমি শুধু দিই যোগান তাতে
ছেলেও থাকে সঙ্গে সাথে
বিক্রী করে যা পয়সা পাই
তাতে ওর পড়ার খরচা মেটাই
আর এই যে দেখছ বাঁশের বাঁশি
ছেলে বাজায় তা স্কুল থেকে আসি,
সুখের তো আর অন্ত নাই
হিরণ্যের পিছে ছুটি কেন তাই?’