সাধনবাবু সাদামাটা মানুষ
সস্ত্রীক গোধুলিতে থাকেন,
গোধুলি … একটা বৃদ্ধাশ্রমের নাম
মহাসুখে তাঁরা আছেন সেখানে
চার তলায় সাজানো গোছানো
ছিমছাম একটা ঘর
দুখানা লিফ্ট
সিঁড়ি ভাঙতে হয় না
রুটিন মাফিক সাস্থ্যসম্মত খাওয়া দাওয়া
প্রতি ঘরে আলাদা খবরের কাগজ
কত্তৃপক্ষ প্রতি রবিবার ঘোরাতে নিয়ে যায়
পুরো গোধুলীকে
বাসে চড়িয়ে
সপ্তাহে দুটো সিনেমা দেখায়
কন্ফারেন্স হলে
প্রোজেক্টার মেসিনে
ভেতরেই ডাক্তার, বদ্যি, অ্যাম্বুলেন্স
সকালে যোগ, প্রাণায়ম, প্রবচন
রাতে টিভি-তে হিন্দী, বাংলা সিরিয়াল
সব মিলিয়ে ভালই আছেন সেখানে।


সাধনবাবু প্রাইভেট কোম্পানীতে
সাধারন একটা চাকরী করতেন,
পেনসন নেই
কিন্তু রিটায়ারমেন্টে
অনেক টাকা পেয়েছিলেন তিনি
ছয় ছেলেমেয়ে
কাউকে এক পয়সা দেননি
পুরো টাকার এম আই এস করেছিলেন
সুদের টাকাতেই বুড়োবুড়ীর চলে যায়
যতদিন হাত পা চলেছে
বাড়ীতেই ছিলেন
পরে গোধুলীতে উঠে এসেছেন
সুদের টাকা গোধুলির হাতেই তুলে দেন
কোন ছেলেমেয়ের কাছেই থাকেন নি ।


জিজ্ঞাসা করলে বলেন
ফুটবলের মতো লাথি খাওয়ার ইচ্ছা নাই
তাই এই ব্যবস্থা
বেশ আছি।
পটল পয়সা সের হলে
গোধুলীই দাহ সৎকার করে দেবে
শ্মশান খরচের টাকা
ছয় ভাগ হবে না
বুড়িটার জন্যও চিন্তা নাই,
সুদটা তো পেতেই থাকবে
নিশ্চিন্তে মরতে পারব ।