সুহাসিনী,
এ আমার শেষ চিঠি
বাঁচতে চেয়েছিলাম
কপোত-কপোতির মতো ।
বহুকাল ।
কালের ছোবল পড়বে ভাবিনি
গলায় ক্যানসার, ভয়েস বক্স বন্ধ
লেখনী ধুঁকছে, আবৃত্তি মৃত ।
শব্দ উচ্চারনের ক্ষমতা শেষ
শেষ জমানো পুঁজি,
সংসারের ছানিপানি,
সবই নিঃশেষ আমার চিকিত্সায়
শুধু বাড়ীটাই পড়ে আছে,
কিছু দিনের জন্য ।


আমার যাওয়া পাকা ।
দুদিন আগে গেলে ক্ষতি কি ?
বাড়ীটা বাঁচবে, তুমি বাঁচবে,
আমিও বাঁচবো ।
যন্ত্রনার হাত থেকে ।
মধ্য রাতে সবার অগোচরে আর
আমায় আম বাগানে ছুটতে হবে না,
দাঁতে দাঁত চিপে
গলা কাটা মোরগের মতো আর
ছটফট করতে হবে না ।
আমি এ জ্বালার অবসান চাই,
এই দুর্বিসহ যন্ত্রনা থেকে
মুক্তি পেতে চাই ।


কালকের সূর্য নিয়ে আসবে
তোমার জন্য নতুন ভোর
সূচনা করবে এক নতুন অধ্যায়ের
উঠেই দেখবে আমার ঝুলন্ত দেহ
স্প্নদনহীন, নিথর ।
শরীরের প্রতিটি লোম ঘুমিয়ে থাকবে প্রশান্তিতে
বহুদিন পর ।


আমি মরতে চাই বাঁচার জন্য
তোমার হৃদয়ের কোণে
দোয়েল পাখির মতো
ছোট্ট একটা বাসা বাঁধবার জন্য ।
আমি হারাব না, আমি থাকব ।
তোমারই মাঝে,
প্রতিটি ছন্দে,
প্রতিটি গন্ধে,
তোমার সুখে, দুঃখে,
উৎকন্ঠায়, আনন্দে ।
সবই থাকবে যে যার জায়গায়
থাকবে না শুধু
তোমার সীঁথির সিঁদুর
পায়ের রাঙা আলতা
আর আমার পার্থিব শরীর। ।


ইতি - ক্ষণিকের অতিথি