দীপকের সাধ হয়েছিল
বৌ-কে একদিন মদ খাওয়াবে,
নেশায় মাতাল বৌ-কে নিয়ে
ডুবে যাবে সুখ সাগরের অতলান্তে ।
ডুবুরীর মতো খুঁজবে সেই সুখ,
যার টানে সভ্য, অসভ্য মানুষ
দুই-ই ছুটে চলেছে জ্ঞানশূন্য হয়ে ।


কথাটা চুপি চুপি সবিতাকে বলেছিল দীপক ।
সবিতা দীপকের বৌ ।
গাঁয়ের বধু । সেই গ্রাম...
যেখানে সিঁদুরের মতো
লাল রাস্তা চলে গেছে গ্রামান্তরে,
যেখানে কলসী কাঁখে মেয়েরা আজও
জল আনতে যায় সরকারী নলকূপ থেকে,
পানকৌড়ি আজও ডুব দিয়ে মাছ তুলে আনে
মজা বিলের পাঁক ঘেঁটে
পুকুরগুলো যেথায় পদ্ম আর শালুকে ভরপুর ।
সবিতা ভয় পেয়েছিল
কিন্তু রোমাঞ্চ জেগেছিল মনে,
মেনে নিয়েছিল দীপকের আবদার ।


শনিবারের রাত ।
প্রায় বারোটা ।
পুরো পরিবার বিছানায় গা এলিয়েছে,
জেগে শুধু দীপক আর সবিতা ।
দীপক আলমারী থেকে বার করল একটা বোতল
অফিসারস চয়েস ।
দেশে তৈরী বিলাতি মদ ।
এককাপ খাইয়ে দিল সবিতাকে
একটু একটু করে...সাহেবি কায়দায় ।


ধীরে ধীরে সবিতা পা রাখল অন্য এক জগতে,
ওর চোখ ভারী হয়ে এলো,
কথায় এলো জড়তা ।
উচ্চারণ করতে লাগলো অসংলগ্ন, অশালীন শব্দগুচ্ছ,
মাতাল হলো বাঁধ ভাঙ্গা খুশীতে ।
আবেগে জড়িয়ে ধরল দীপককে,
নিজেই খুলে ফেলল শরীরের সমস্ত পোষাক
একটা একটা করে ।


দীপক অবাক হলো । এ কোন সবিতা ?
গাঁয়ের বধুর একি পরিবর্তন !
লজ্জা যাকে জড়িয়ে থাকে বারো হাত শাড়ীর মতো,
শালীনতা যার নববধুর অবগুন্ঠন সম
সে আজ তার সামনে বিবস্ত্র, নগ্ন ।
একি সেই সবিতা !
যাকে সে বার বার নিজের হাতে নগ্ন করে,
হরণ করে তার আভূষন
ধীরে ধীরে,
ভালোবেসে
রাখে না শরীরে সূতোর আবরন ।
সে পায় এক লজ্জামাখা আবরনহীন নারী,
সারা শরীরে যার কামোদ্মাদনার লহরী
দুই চোখে মধু মিলনের হাতছানি,
সে এক নৈসর্গিক সুন্দরতা....
যেন কামের রতি
সৃষ্টির দেবী ।


আর এ কি নগ্নতা ?
যেন নির্লজ্জ বেহায়া কোন কামোন্মত্ত রমনী
ডাকছে তার অসহনীয় কাম জ্বালা মেটাতে ।
এ নারী দেখেছে সে বাৎসায়নের কামসূত্রে,
খাজুরাহোর মন্দিরে,
পর্ণো ছবিতে ।
সবিতার এই অসভ্য   রূপ সে কখনো দেখে নি,
দেখেনি নগ্নতার এই কদর্য চেহারা ।
আজ সে বুঝেছে নগ্নতার দুটি ভিন্ন রূপকে ।
সে মাতাল সবিতা চাই না,
সে চাই লজ্জারাঙা গাঁয়ের বধু সবিতাকে,
যে প্রতিদিন আসে তার বুকের মাঝে
সুসজ্জিতা হয়ে,
পূর্ণিমার চাঁদের মতো ।