পরাণ মন্ডল গাঁয়ের কেউকেটা,
বিয়ের সিলভার জুবিলিতে
হীরের আংটি উপহার দিয়েছিল বৌ-কে,
কয়েক দিনের মধেযই ঝড় জলের রাতে
সেই আংটি হরিয়েছিল বউ ।
জল কাদার মাঝে পরাণ মন্ডল
সারারাত খুঁজেছিল সেই আংটি
টর্চের আলোয় কাকভেজা হয়ে ।


আমার বয়স তখন ছমাস
দাদার বয়স দুই ।
গুটি-বসন্ত হলো আমাদের দুজনের - একইসঙ্গে
কলাপাতা দিয়ে আমরা জড়ানো থাকতাম পাশাপাশি
আমি বেঁচে গেলাম, দাদা মারা গেল ।
নকশি কাঁথায় জড়িয়ে রাজবেশে
দাদাকে নিয়ে গিয়েছিল পদ্মার চরে,
মরঘাটিতে সমাধি করে এসেছিল কয়েকজন ।


পরদিন দাদু সারারাত ঘুমোন নি,
ভোর রাতে পৌঁছেছিলেন সটান মরঘাটিতে,
দাদুকে অনুসরন করেছিলেন আমার বাবা ।
বাবা দেখলেন, ঠিক পরাণ মন্ডলের মতোই
দাদু খুঁজছেন তার হীরের আংটিকে ।
খুঁজছেন টাটকা খননের দাগ ।
কিন্তু হায় ! ততক্ষনে শনশনে হাওয়া
ওলট পালট করে দিয়েছে বালির চরকে ।


পরাণ মন্ডল হয়তো আবার একটা
হীরের আংটি কিনে বউ-এর আঙুলে পরিয়েছিল
কিন্তু দাদু খুঁজে পাননি তার হীরের আংটিকে ।
পাওয়ার কথাও নয় .......
এ তো শুধু হীরের আংটি নয়,
পূর্ন গ্রাস সূর্য গ্রহনের হীরের আংটি,
এ আংটি ক্ষণিকের জন্যই আসে,
দেখা দিয়েই মিলিয়ে যায় ।