ও বন্ধু আমার!যেমন দেখছ নই তো আমি তেমন
সে শুধু পরনের ছেড়া বস্ত্র;যা দিয়েছে তোমাকে
তোমার সকল প্রশ্ন হতে আমার সকল অবহেলা থেকে মুক্তি।
ও বন্ধু আমার!আমার কর্ম-বাক্যে,চিন্তা-চেতনায় অবিশ্বাস
অনাস্থা থাকতে পারে তোমার, কেন না তোমার সুস্থ চিন্তা
চেতনায় মোর বাক্যালাপ মূল্যহীন,আর আমার যত কর্ম
তোমার কাছে প্রত্যাশাহীন-
ও বন্ধু আমার!যখন তুমি বলো,”ঝর্ণা থেকে আসে জল নদীতে”
আমি বলি,“নদী থেকে আসে জল ঝর্ণাতে”,
তুমি তো বোঝ না এ মন বাতাসে নয়,বাতাসে ভরা সমুদ্রে;
তুমি তো আমার ভাষা বোঝ না,আমিও পারি না বোঝাতে।
সমুদ্রের পথ ধরে চলি আমি,তবে একা,শুধুই একা-
ও বন্ধু আমার!যখন তোমার দিন,আমার তখন রাত্রি
তবুও আমি দিনের কথা বলি,রৌদ্রের জোয়ারের কথা বলি,
আমি নেচে নেচে বলি দিন ভালোবাসি,আর চলি অজানার পথে।
কখনোই শুনবে না তুমি আঁধারের গান,দেখবে না তৃণগুল্মের সাজ
জানবে না তুমি রাত জাগা পাখির ছটফটানি;কী দারুণ ব্যথা,
কী নিদারুণ জ্বালা এসবের,তুমি কিছুই দেখো না শোনো না
আমি রাতের সাথেই আছি বিজড়িত
থাকবো, তবে একা,শুধুই একা-
ও বন্ধু আমার!তুমি যখন পুষ্পের ঘ্রাণ নিয়ে স্বর্গে,আমি তখন
বিশ্রী বিষাক্ত পতঙ্গের ঘ্রাণ নিয়ে নরকে;হয়তো তখনো সুদূর
থেকে ডাকবে যোগাযোগহীন কোন বন্ধনে।হয়তো বলবে
“কোথায় তুমি,একটু দেখি”, উত্তরে বলবো “এইতো বন্ধু তোমার পাশে”
কেন না তুমি তো দেখো না আমার নরক;তোমার যত দৃষ্টিশক্তি পুড়িয়ে দেবে
এই নরকের অগ্নিশিখা,ধূম্রজালের কুন্ডলীরা বন্ধ করে দেবে তোমার নাসিকা রন্ধ্র।
আমি ভালোবাসি স্বর্গ,তবুও ভালোবাসি আমার নরক,নিমন্ত্রণ রইল
দেখে যেও একবার;এই নরকের আমার আবাস
তবে একা শুধুই একা-
তুমি ভালোবাসো বিশ্বাস সুন্দর আর সত্যে, বলে উঠি “আমিও ভালোবাসি”
তোমার দিকটা ভেবে; প্রচণ্ড হাসি পায় এই ভালোবাসা উপহাস করে,
আর হৃদয় আমার ভেঙে পড়ে,আমি তখন হাসি ঝরনার মত কেঁদে কেঁদে।
তুমি তো আমার সে ঠাট্টা দেখবে না;আমি হেসে যাই হেসে যাবো
তবে একা শুধুই একা-
ও বন্ধু আমার!গুণী তুমি,নির্ভীক তুমি আর জ্ঞানী ও;তাই শুধু নও
নির্ভুল ও বটে;কিন্তু আমি তো উন্মাদ,মুখোশে ঢাকা সব আমার
নিজেকে লুকিয়ে ঠকিয়েছি অনেক,আমি উন্মাদ, উন্মাদ রবো
তবে একা শুধুই একা-
ও বন্ধু আমার! কী করে বোঝাবো তোমায়,আমি যে বন্ধু নই তোমার
তুমিও যে বন্ধু নও আমার!তুমি যে পথে চলো সেতো নয় আমার
তবুও একই পথে পা রেখে,তোমার হাত দুটি হাতে রেখে
হেঁটে যাই হেঁটে যাই -
বলরামচক,আত্রাই,নওগাঁ।
০১/০৩/২০০৬ ইং।