মন্থর সেই রাতে...
থেমে গিয়েছিল চাঁদের বয়স—
দুরের ঐ গাছের আঁড়ালে।


আঁধারের রং ভেঁদ করে
পেঁয়াজের খোঁসার মত ফ্যাঁকাশে আলো
চোখের ছাঁয়ায় স্থির হয়ে ছিল।
তারার মেয়েরা পথ ভুলে
খঁ'সে পরেছিল তোমার মেঘ্লা চোখে।


জন্ম থেকে জন্মান্তরের প্রাগৈতিহাসিক সেই রাত...
শঁকুনির কান্নার মতো
ত্রিশুল হয়ে বিঁধে থাকা হতবিহবল সেই রাতে
তুমি এসেছিলে।
শেষ দেখা...
শেষবারের মতো আদিম রক্ত টুকুর দায় স্বীকার করতে ।


হাজার ধর্ম কে উপেক্ষা করে, যে রক্ত'রা
বাঁধ ভেঙ্গে মিশে গিয়েছিল একই মোহনায়,
দুনিয়ার সহস্র টান দু'পায়ে  ঠেলে' তৈরি হয়েছিল যে সম্পর্ক,
এসেছিলে তার সমাধি রচনা করতে।...


অবিশ্বাসের পর্বত নিয়ে আমি দাড়িয়ে ছিলাম বিশ্বাসের কিনারায়।
তোমার অভ্যস্ত হাতে
ছিল, আঁষাঢ় এর মেঘে ভিঁজে যাওয়া কদম ফুল।
ধীর পায়ে এসে দাড়িয়েছিলে
আমার স্থির মুখে তাকিয়ে তীর হারা ঢেউয়ের মতো।
যেন উথলে-পাতলে কত স্রোত বুকে নিয়ে
সমুদ্র-সৈকতে আঁছড়ে পড়া ঢেউ;
আমার সামনে তুমি।


"শত জনমের পুরনো সেই তুমি "
সদ্য-ফোঁটা  সাদা-গোলাপের মতো,
যেন এক একটুখানি শ্রাবণধারা এসে
ভিঁজিয়ে দিয়ে গেছে ক্ষণেক আগেই।
শত জনমের পুরনো সেই তুমি ...
এই তুমি--
সহস্র সুখের ইতিহাস,
হাজার টা জন্মের সাক্ষী;
দুঃখের কাল রাতে  পাশে ছিলে শান্ত্বনা হয়ে,
খুশি হয়ে ঢেউ দিয়েছিলে  সাফল্যের জোয়ারে;
কষ্টের আর্তনাদে দেবী হয়ে
শীতল পরশের মতো
ভুলিয়ে দিতে তুমি আমার যন্ত্রণা।
বিদায়ের কান্নায়, আমার কপালের ঘামে
এখনো ভিঁজে আছে তোমার ঐ আঁচল।...


সেই তুমি --
কাঁচা সোনার মতো;
মোমের তৈরি দেহ তোমার
চলে যাবে আজ
সকল রক্তের রং , হাজার সম্পর্কের টান দুই পায়ে পিষে দিয়ে।


কাল থেকে স্মৃতির বয়স
বাড়তে থাকবে প'লে প'লে।
অবহেলিত স্মৃতিগুলো বুক চাঁপড়ে-চাঁপড়ে
অস্থির হয়ে পুড়বে দগ্ধ বুকের অন্ধকার গহবরে।


খু'ব মনে আছে—
শুকনো চোখে ,
জেদী ঠোঁটে,
বুকের সকল তোলপাড় দুরে ঠেলে নিরাসক্ত গলায়
সুধু এটুকুই বলতে পেরেছিলাম--
..."চলে যাবি ?
যা !
কাঁদবি না , কুত্তার বাচ্চা" ..!


ফুল গুলো পড়েছিল পায়ের কাছে
তুমি হাত-জোড় করেছিলে ক্ষমা চেয়ে নিতে,
ঊদ্দাম ঝড়ের বেগে আমি সরিয়ে দিয়েছিলাম
ঊত্থিত তোমার দুই হাত !


"না"-- দেইনি তোমাকে  
শেষ ক্ষমা টুকু চেয়ে নিতে।


আকাশী রঙয়ের নীল-পেঁড়ে-জামদানী পরা
নীল-অপরাজিতার পাপড়ির ভাঁজে তোমার ঐ দেহ,
সোনালি লতার মতো
আঁকড়ে ধরে' অবশ এই আমাকে
বোঁটা হ'তে খ'সে পড়া ফুলের মতো
লুটিয়ে পড়েছিলে
শার্টের বোঁতাম খোলা
এই আমার নগ্ন-লোমশ-বুকে।
অন্তিম শরিরী গন্ধে
সাঁপের মতো মুঁচড়ে' মুঁচড়ে' মুখ গুঁজেছিলে
কাঁচা সোনার মতো তোমার ঐ মুখ।
বারংবার কেঁপে উঠছিল তোমার দেহ।
তোমার চোখের অস্থির জল-জোয়ারে ভিঁজেছিল আমার বুক।...


আমার জানা ছিল না---
"কে দেবে তোমার এই অশ্রুর দাম"!