এবার সরিষার ফুল নেই এই ক্ষেতে;
খেঁজুর তলায় এই মাঘের শীতে’
সে নবোঢ়া’
সতের বর্ষ-শেষের শেষ সূর্য ডুবে যাওয়া
সলোক চোখ নিয়ে,
সে চোখে কাঁটা বেঁধার আগ পর্যন্ত
আমার চোখে শিথিল হয়ে লেপ্টে থাকা চাঁদের মত
চেয়ে থেকে বলল:
“একদিন তুমি বুঝি প্রেমিক ছিলে আমার;
আমি তোমায় ভালোবাসতাম,
তারপর তুমি সে পুরুষ
অন্য কারো নাগর হ’লে;
কোথায় আমার অর্ঘ-প্রেমের!
কেউ দি’লোনা’,
দি’লোনা সে দাম আমার প্রেমের;
একদিন তুমি প্রেমিক ছিলে আমার!
আমি তোমার যোগিনী…
আজও পথ ভুলিনি তোমার’…
‘আমি অন্ধ এই দ্যাখো,
চোখ নেই আমার,
তবু চেয়ে রয়েছি,
ভুলিনি আমার চোখে চোখ পড়লেই সুধু
তোমার নিঃশ্বাসে অমন ঝড় উঠতো;
লুকোতে পারতে না কিছু আমার থেকে।
দেখো আজও তোমার শ্বাসে
সেই দামী ব্রান্ডের রসের ঘ্রাণ
আমি জানি’,
‘তুমি বলছনা কেন কিছু?
কিইবা আছে তোমার বলার’
অসমাপ্ত বিদায়ে চ’লে গেছ,
তবু রেখে গেছ খোলা ফিরে আসার অনেক পথ!
সত্যিই বড় বেকুব তুমি!
তোমায় ভুলে থাকা যায়না মরদ”!


খেঁজুর ফুলের ঘ্রাণ আসে,
লোকান্তরের কেউ দ্যাখেনি’
আমি এসেছি ফিরে;
সব অনুযোগ গি’লে নিয়ে সুধু
এতুটুকুই বললাম:
“ছোঁবেনা দরদী?
চোখ নেই তো কি?
ছুঁয়ে দেখ, দেহ নই;
আত্মা আমি, ফিরে এসেছি তবু তোমারই কাছে।
তোমায় বিশ্বাস করাতে পারিনি কোনদিন,
যা করেছি, সব তোমাকে ভালোবেসেই;
আজও দেহ রেখে এসেছি ওই দূর নগরের পার,
এসেছি তোমার আমি, ছুঁতেও পারবে না।
তবুও তো ভালোবেসেছিলাম।
আজ তুমি অন্ধ,
আমি দেহহীন;
এসো কারো কোন চাওয়া নেই,
ভালোবাসাটা এমন নিঃস্বার্থে নিংড়ে যাক’!


‘কিরে আমি বেঁচে নেই শুনে,
তুমিও এমন মৃতবৎ বৃক্ষদন্ডের মত,
অবশ হ’য়ে রইলে কেন!
ভালো বাসি আমিও;
বিশ্বাস করোনি তুমি কোনদিন,
আমি নিঃস্বার্থে বিশ্বাসী ছিলাম
জানো… আজও
কথা নেই বার্তা নেই,
গাল ভরা সুধু কবিতা।
প্রেম করবেনা দরদী?
সুধু প্রেমে পড়লে হবে?
ওদিকের সব পথ বন্ধ করে চলে এসো,
ছিড়ে ফেলো প্রয়োজন।
এত দরদ নিয়ে থেকেছ কেন?
কতবার আর প্রেমে পড়বে এভাবে?
রাতে-দিনে ভালোবাসি ভালোবাসি।
নিশীথে আলো নিভলেই---
তোমার ঘরে অন্য কারো ঘামের গন্ধ...
এসো ভালোবাসতে শেখাবে আমায়।


‘দ্যাখো, হাওয়ারা মিইয়ে গেছে,
তোমার আমার সম্বোধনে;
এই রাতের অন্ধকার’
ওরাও জানে আমি দেহ-সর্বস্ব নই;
তোমরা, সবাই,
যারা জানতে দেহজ প্রেমই সব!
আমি আজও নিঃস্বার্থে নিঃশ্বাস নিতে পারিনি,
তবুও ফিরে আসতে তৎপর হয়েছি,
আত্মা-আমি এসেছি তোমাকে বিশ্বাস করাতে;
আমি নেই,
তুমি ঠিকই মেতে আছ অন্য পুরুষে”!


২৬.১২.১৫
পাইকপাড়া, ফকিরহাট ।