কে শোনে কার গান!
পাড়ার মেয়ে রাস্তা দিয়ে গেলেও
সময় কই তাকানোর!
ফাল্গুনে যে জমিতে যৌবন আসে,
চৈত্রে তার গায়ে আমার চোখ নেশাগ্রস্থ হয়!
অল্পদিনে বিপত্নীক হওয়া সৎ যুবক যখন
অসততার প্ররোচনায় পড়ে:
“গতর-খাটা-সুন্দরী’র” ঘরে ঢুকলেই
মনে পড়ে যায় তার সতী স্ত্রীর কথা!
অন্য ঋতুতে তেমনি আমিও আত্মভোলা হই—
তোরে মনে করে; যার কাছে শোয়ার কথা বলতেই
আঁচল সরিয়ে বুক পেতে দেয় আমাকে, সে তুই-ই; বসন্ত!


প্রকৃতির যত রূপ বাংলায়:
বর্ষায় কিংবা শীতেও,
তোরেই মনে করি ঠিক—
বৃষ্টি যেন তোরই দূতিয়ালী করে;
শীত আগলে রাখে তোরে; যেমন
সদ্য বেড়ে ওঠা কিশোরীর হঠাৎ
ওড়না সামলানোর চেতনা জাগে।
তোর কাছে এসেছি আজ;
নিজেকে সরিয়ে রেখেছি সংসার থেকে!
তুই আমারে নিয়ে চল সেই রাজ্যে,
“যেখানে মানুষ—যৌবনে
তোরেই ভাবে সুধু—যৌবনবতী;
যে জগতের মেয়েরা তোর মত—
যৌবন আগলে রাখতে হিমশিম খায়”।


সেই পুরুষের দেশের গল্প  শোনাবি আমায়,
“যেখানে বয়সী রমণীরা—বউ না হয়ে
অন্য পুরুষে আঁচল সরাতে—স্রষ্টার ভয় ঠোঁটে আওড়ায়;
মানুষ—মানবীর শরীরে তাকায়না দিনের আলোতে”।


তুই  এমন কোনো উপন্যাসের কাহিনী লিখতে পারিস,
যে উপন্যাসে—“আমি এক পাগল-চরিত্র:
বৈষয়িক হিসেব-নিকেশ জানিনা কিছুই;
সুধু সৌন্দর্যের প্রেমেই পাগল;
সুন্দরের মুখের পানে তাকায়ে দিন কাটে যার”!
আর যেখানে—“সব যুবকই বিয়ের-রাতে
পূর্ণিমার সতীত্ব ছেদ করে;
কুমারী মেয়ের শরীর দেখে
অযথাই কেউ সন্দেহপ্রবণ হয়না”:
এমন এক উপাখ্যান—খুব দরকার রে,
রক্ষণশীল চোখে সুন্দরের হেরফের সয়না।


সৎ মানুষের জীবন—যেখানে হেয়ালী,
আমি সত্য জানি, কিন্তু মানবে ক’জন?
ভাগের রসদ হাতছাড়া করতে চায়না কেউ,
ঘরছাড়া গরু বারো-গেরস্থের তাড়ানী খেলেও
মুক্তিতেই বুঝি তার যত অট্টহাসি!
যত সুখ যেন উত্যক্ত আগুনেই!


পাগলটা সে বটতলার মাটিতে গড়িয়ে চেঁচায়:
দেখো, দেখো: “বিয়ের আগেই—অবনত-বক্ষা
মেয়েলোকটির মত হয়ে গেল সমাজটা;
যেখানে অ-সতীত্বেই সয়ে যাচ্ছে সবার”!
জীবনটা বড় অবোধ্য হয়ে যাচ্ছে
কর্কট-রোগাক্রান্ত এই সভ্যতায়...
কারো কথা কী শুনবো আর;
আজ চৈত্রের সাতাশ দিন।
যাওয়ার সময় হলো তোর।
পাগলটা আগেই হয়েছি আমি—তোর প্রেমেই;
ভুল বুঝিসনে আমায়!
দে—আর একটু বুক পেতে দে,
শুয়ে শুয়ে একটু শুনি তোর মাটির নিঃশ্বাস!


২২.০৩.১৬
পাইকপাড়া, ফকিরহাট, বাগেরহাট ।