আজকাল প্রায়ই মনে হয় এই বুঝি মরে যাব
বিশেষ করে শরীর একটু খারাপ করলেই
পেটব্যাথা মাথাব্যাথা গ্যাস কিংবা একটু দুর্বলতা
এমন সাধারণ সমস্যায়ও মৃত্যুভাবনা হয়
তবে এখনও বেঁচে আছি বেশ,
আলহামদুলিল্লাহ!


তার মানে এই নয় যে বড় কোনো অসুস্থ
মুরব্বীরাও মাথার ওপরে অনেকেই এখনও জীবিত
অবশ্য চোখের সামনে চলে গেছে কত নিকটজন
তরুণ যুবা সমবয়সী কতজনের জানাযা পড়লাম
আবার যে নানাভাই আমার নাম রেখেছেন
তিনি এক দশক আগে সেঞ্চুরি পার করেছেন
সে হিসাবে কেবল অর্ধ শতাব্দি পার হলো ক’বছর
দেখতে তরুণ লাগলেও পরের প্রজন্ম এখন এডাল্ট
তাহলে কি চলে যাবার সময় নিকটে প্রায়
রাতে ঘুমাতে গেলে প্রায়শই মনে হয়
জাগতে পারব তো, নাকি শেষ ঘুম এটাই
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও ঘুরেফিরে আগে মৃত্যুচিন্তাই
যে সামান্য লেখালেখি করি তার মধ্যেও থাকে এটা
অনেকে এটা সেটা ভাবতে পারেন বুঝি তারপরও লিখি।


তাহলে কি মৃত্যুকে ভয় পাই-
সর্বদা আতঙ্কে আড়ষ্ট হয়ে থাকি
ঠিক তাও নয়- দিন দুনিয়া তো করে যাচ্ছি
ভয় পেয়ে কি আর মৃত্যুকে সরানো যাবে?
কেউ মৃত্যূ চায় না,
কারন পরের জীবনটা পুরোটাই অচেনা
মানুষের কাছে তার বর্তমানটা অনেক কনফার্ম
কিন্তু যদি সে জানত-
পরের জীবনটা এর চেয়েও আনন্দের
তবে কি করতো- এখনি চলে যেতে চাইত?
মনে হয়- তখনও চাইত না!
অনেকেই বিরক্ত হয়ে বা ফান করে বাঁচতে চাইনা
আসলেই কি তাই? এটাও কিন্তু সত্যি নয়
আত্মহত্যা যে করে, সেও শেষে বাঁচতে চায়!


সবাই কি আমার মত এরকম ভাবে
নাকি আমিই অস্বাভাবিক বাড়াবাড়ি করছি
আল্লাহ বলেছেন বেশি বেশি মৃতুকে স্মরণ করতে
মানুষ কি তাই স্মরণ করে?
যদি করতো তবে কি জগতটা এমন জটিল হতো?
মিথ্যার বেসাতি লোক ঠকানো বাটপারি
অন্যায় অত্যাচার ক্ষমতার লড়াই, মারামারি
কেনো করে এত্তসব?


দু’নম্বরি মিথ্যা চুরি অন্যায় করে
মানুষ অর্থসম্পদ বিত্ত বৈভব গড়ে
কার জন্য- সন্তান বা পরের প্রজন্মের জন্য?
কিন্তু ইতিহাস অভিজ্ঞতা কি বলে?
কোনো ডাইনেস্টি টিকেছে?
টাকাপয়সা সোনাদানা সম্পদ কাজে লেগেছে?
এর উত্তর কিন্তু আমরা সবাই জানি
তারপরও সবাই দুনিয়ার মোহে ব্যস্ত
খুব কমই পারছে সিরাতুল মুসতাকিমে চলতে
জেনে শুনেও এমন কান্ড- সত্যি বড় আজব!


যদি জানতাম কাল মরে যাব,
বা আর ক’ঘন্টা আছি
তবে কি করতাম- কান্নাকাটি
নাকি খুব বেশি ইবাদত বন্দেগী করতাম
সেই সাধ্য আছে কার যদি না থাকে নসীবে
মৃত্যুকষ্ট নাকি খুব ভয়ানক
ঈমান নিয়ে যাওয়া যাবে কিনা সেটাও অনিশ্চিত
মৃত্যুর পরের বাস- বরযাখ জীবনের বর্ণনাও কঠিন
আসলে বিষয়গুলো বিধাতা নিজের হাতেই রেখেছেন
কাকে কি দিবেন তা তিনিই জানেন
স্রষ্টার ওপর অগাধ বিশ্বাস আমার
নিজের ওপরও আস্থা রাখি প্রবল
মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি দোযখের লাকড়ি বানাতে
তিনি সৃজন করেননি আমায়
অনেক ভুলভ্রান্তি করেছি বটে,
আবার তিনি ক্ষমাও করার কথা বলেছেন
দুনিয়াতে যেমন পেয়েছি তাঁর অশেষ রহমত
পরের জীবনেও তাই পাবো আস্থা প্রবল।


বিনা কারনে আমাকে পাঠানো হয়নি দুনিয়ায়
কাজ শেষ না করে এপার থেকে যাওয়ার নেই উপায়
মৃত্যু যদি এখন লেখা থাকে- আসবে
আমার তো বেশি কিছু করার নাই
ভাগ্যে যা লেখা আছে তাই হবে
ডাক্তার অষুধে কিছুতেই পারবেনা ঠেকাতে
নিজের ইচ্ছাতে আসিনি ধরাতে-
এখান থেকে যাওয়াও হবে তাঁরই ইচ্ছাতে
কেবল এটুকু চাওয়া-
যাওয়ার কালে পাই যেনো তাঁর দয়া।