তোমরা সবাই শুনবে নাকি আমার একটা কান্ড,
হেসে উঠে শেষে বলোনা যেন এসব মিথ্যে ভ্রান্ত,
জীবনে মোর কী জানি ঘটে গেছে- ধূর ছাই!
ভাবতেই খালি মনে জ্বালা পাই।


আমি এক প্রজাপতির প্রেমে পড়েছি,
এ ডাল ও ডাল বেয়ে তার পিছু চলেছি,
পথের বাঁকে কখনো পাপড়ি মেলে বসেছি,
হৃদয় হৃদয়ে কতো সুখ স্বপ্ন বুনেছি।


একদা পুষ্প কাননে মেতেছিলাম লুকোচুরিতে,
হঠাৎ সে মিশে যায় লক্ষ প্রজাপতির মাঝে।
সেই থেকে প্রত্যহ তারে খুজে ফিরি সকাল-সাঁজে,
শাখে-শাখে, পাতায়-পাতায়, কখনোবা পুষ্প ভাঁজে।


শেষে অশ্রুচোখে হতাশ মনে ফিরছি বাড়ি,
আমার সামনে হঠাৎ সে ডানা মেলে পাতল আড়ি।
অভিমানী সুরে বললাম; কে তুমি পথ ছাড়ো-
অথচ সে ডানা মেলে নির্দিদ্ধায় এগুচ্ছে আরো।


কাছে এসে বলল সে, ‘আমি তোমার সুখ-স্বপ্ন’
মিথ্যে কথা- 'বিধাতা তোমাদের সৌন্দর্য, ঐশ্বর্য,
আভিজাত্য আর উচ্চাকাঙ্খা দিয়ে গড়েছেন;
তোমাদের অভ্যাস স্বপ্ন নিয়ে খেলা-
যা আমার জন্য বিষাদময় দুঃস্বপ্ন'।


মুখের উপর ডানা মেলে কথা থামিয়ে বলল সে-
বিশ্বাস করো, আমি তোমার সেই কল্পনা,
যাকে নিয়ে হৃদয় মাঝে একেছিলে শত আল্পনা।
জ্যোৎস্না রাতে আলো-আঁধারে মেতেছিলে লুকোচুরিতে,
বিশ্বাস করো- আমি..আমিই তোমার সেই কল্পনা।


কেঁদো কেঁদো গলায় অস্পষ্ট স্বরে বললাম তারে,
তবে তাহলে কেন গিয়েছিলে, কোথায় কোন পরবাসে?
সেই থেকে অদ্যবধি কাননে কাননে তোমায় খুঁজেছি....
থাক ওসব কথা, সব ব্যাথা আজ তোমায় পেয়ে ভুলেছি।
তবে চলো সেথায়, যেথায় তিল তিল ভালবাসা দিয়ে-
ঘর তুলেছি, আবারও হৃদয় হৃদয়ের সুর সঙ্গী হবে।


ওগো নাহ্, আমাকে যে আবার যেতে হবে, ওদিকটা গুছিয়ে-
একসাথে তবেই ফিরব তোমার কাছে।
মাত্র ক’টা দিন অপেক্ষা করো-
দেখবে তোমার স্বপ্ন পূর্নতা পাবে।
আমি ভালবাসার সিক্ত হস্তে জড়িয়ে তারে কথা দিলাম-
আমৃর্ত্যু এই মন তোমার অপেক্ষায় থাকবে,
তোমার প্রতিক্ষীত এই চোখ বিনিদ্র রজনী কাটাবে।


সেই থেকে আজ পর্যন্ত-
কয় ডজন বসন্ত পেরুলো হিসেব নেই,
তবুও সেই-
ছোট্ট প্রজাপতির আশায় বিনিদ্র জেগে রই,
বালি তীরের ঢেউয়ের মতো-
স্বপ্নগুলো আছড়ে পড়ে হৃদয় তীরে,
মরেও আবার জীবিত হই-
অন্তত একবারও যদি তার দেখা মিলে।