"শহীদের স্মৃতি"
-মোঃ আব্দুল আলীম
আমি এক সুবোধ বালক শহীদের বেদীতে যখনই আসি ফুল হাতে বরিবারে একগুচ্ছ রজনীগন্ধা, গোলাপ,গাঁদা,হাসনাহেনা,শিমুল,পলাশ আরও কতো অজানা অনেক ফুলের বাহারি ডালা হাতে বরিবো তোমারে আশা নিয়ে হাজির...। শান্ত সৃষ্ট সুবোধ বালকের বিচরণের ক্ষেত্র হঠাৎই গুড়ুম গুড়ুম  ফটাস ফটাস গুলির শব্দে চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে শুধু লাশ আর লাশ লাশের স্তুপ থেকে পঁচা দুর্গন্ধে আকাশ বাতাস ভারি করে তুলেছে। শিয়াল,কুকুর,শকুনেরা ছিড়ে ছিড়ে খাচ্ছে মৃত মানুষের পড়ে থাকা দেহ।আর সেই লাশের ভিতর কিছু জিন্দা মানুষেরও ছিড়ে ছিড়ে খাওয়ার করুন মৃত্যুর দৃশ্যের আর্তচিৎকার দিকবিদিকে ছোটাছুটি জনমানবশূন্য সুপ্ত দেহ কুঞ্জ তখন-ই জ্বলে ওঠা হৃদপিণ্ড ঝলসানো রক্তের কণিকা হতে বারবার স্মরণ করিয়ে দেয় এ-সব কিছু দেখেও আমি এখনও চুপ?আমার ভিতর কি কোন মনুষ্যত্ব বোধ শক্তি নেই? ও আমার মাতৃভাষা বাংলা ভাষার ভাইয়েরা, মায়েরা, নিপীড়িত দেশের মানুষ? তোমরা যদি বাঁচতে চাও? এদেশের মানুষকে বাঁচাতে চাও?বাংলা ভাষাকে বাঁচাতে চাও?বাংলা ভাষায় কথা বলতে চাও?তাহলে এগিয়ে যেতে হবে। এসো সবাই একত্রে দখলদার হানাদার বাহিনীর প্রতিহত করবো।বাঁচার মতো একসাথে বাঁচবো,মরলে একসাথে মরবো,হৃদপিণ্ড ঝলসানো রক্তের কণিকা হতে বিদ্রোহের আগুন জ্বলে ওঠে, তৈরি করতে শেখায় যোদ্ধা।যা দেখে আমাকে হতে হয়  বিপ্লবী। যার যাকিছু আছে তাই নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ি আগ্রাসী হানাদার বাহিনীর উপর।মরণতো একদিন না একদিন হবেই। সে আজ হোক বা কাল হোক। সবকিছুর ইতো শেষ আছে।একদিন না একদিন তো এটা কেউ না কেউ বলতে পারবে সেই ছোট্ট সুবোধ বালক মৃত্যুর যন্ত্রণাদায়ক দৃশ্য দেখে রক্তে টগবগ করে ফুটে ঝাপিয়ে পড়ে হানাদার বাহিনীর উপর এবং রুপান্তরিত হয় বিপ্লবী সাহসী বীর যোদ্ধা।কেনই বা থাকবো পরাধীনের গ্লানি নিয়ে সুখী ভাবনা ম্লান করে পরের তাবেদারীতে। সুজলা সুফলা শষ্য শ্যামলা আমাদেরই বসুন্ধরা অন্যের দখলদারিত্বে শাসনের শোষনের বেড়াজালে বন্দী হয়ে থাকতে।তখনই পাকিস্তানি বর্বরতা হানাদারদের দোসর রাজাকার আলবদর দের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে কখনো বিস্ময়-বিহ্বল চোখে মুখে ফুটে ওঠে যুদ্ধ জয়ের কোন না কোন সুসংবাদ ভেসে আসে আর কানে বেজে উঠে আনন্দের আত্ম চিৎকার। তখনই ভুলে যায় মৃত্যু নামক সেই করুন যন্ত্রণার কথা।একদিকে নদী-নালা,খাল-বিলে থৈ-থৈ পানি,অন্য দিকে পাকিস্তানি সৈন্য,আবার দেশের ভিতর পাকিস্তানি দোসর রাজাকার আলবদর দের বিরুদ্ধে বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করে পূর্ণ শক্তি আর সাহস নিয়ে আগ্রাসীর কালো থাবা ভেঙে চুরে চুরমার করে দীর্ঘ "নয় মাসে" অনেক কষ্টে অর্জিত লাল সবুজে ঘেরা আমাদের এ পতাকা।আমাদের"অহংকার"।পৃথিবীর ইতিহাসে স্থান পায় ত্রিশ লক্ষ শহীদ,দুই লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে নতুন একটি মানচিত্রের, যার  নাম সোনার "বাংলাদেশ"। না না না আমরা ভুলিব না তোমাদের মহিমান্বিত গৌরবের অতীতকে, কোনদিন না।তাইতো বারেবারে ফিরে আসি এ-ই শহীদ মিনারে,স্মৃতিসৌধে বরিবারে একগুচ্ছ রজনীগন্ধা,গোলাপ,গাঁদা,হাসনাহেনা, শিমুল পলাশ হাতে আমাদের গৌরবান্বিত মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বের বীর মুক্তি যোদ্ধাদের বীরত্ব গাঁথা সেই করুন মৃত্যুর যন্ত্রণাদায়ক দৃশ্য,যাদের হারিয়ে আমরা পেয়েছি সবুজের বুকে,লাল সবুজে ঘেরা আমাদের এ পতাকা,আমদের"অহংকার"।হে আগামীদিনের বংশধর তোমরা আমাদের গৌরবান্বিত মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বের বীর মুক্তি যোদ্ধাদের বীরত্ব গাঁথা সেই অতীত ইতিহাসের কথা ভুলিও না, না না না আমরা ভুলিব না তোমাদের মহিমান্বিত গৌরবের অতীতকে কোনদিন না, না না না,সোনার এদেশ বাংলাদেশ।   সোনারএদেশ বাংলাদেশ আগামীর পৃথিবীর ইতিহাসে যতই স্থান পায় শক্তিশালী দে-শ রুপি। আমরা তোমাদের ভুলিনি,ভুলিনি,ভুলিনি,ভুলিব না,ভুলিব না,না না না আমরা তোমাদের ভুলিব-না।।                                                                                    ###############
    মোঃ আব্দুল আলীম
       রাজগঞ্জ বাজার
               যশোর
         ১১/০২/২০২২