আমি নরকের মানুষ বলছি :—
আহ: কি মর্মান্তিক জীবনধারা ;
হ্যাঁ, আমি শিকার করি আমি অমানুষ
কিন্তু তোমাদেরকে মানুষ হওয়ার বার্তা জানায়  
তবে হ্যাঁ আমি তোমাদের অন্তর পুড়াই না,
কারণ অন্তর বড্ড ভারী জিনিস ।
মানুষ যেভাবে পশু লালন করে অন্তর দিয়ে
কিন্তু  খাবারের তাগিদে পশু হিংস্র হয়ে উঠে না ;
মানুষেরা যেভাবে তাদের নিজেদের স্বার্থে
বিসর্জন দেয় মনুষ্যত্ব আর জানোয়ার হয়ে উঠে ।
এ ধ্বংসস্তূপ দেখে আমি হয়ে উঠি  লোভী,
তোমাদের আত্মাকে ছুড়ে দেই নিজ হাতে কোমাতে রোগীর কাছে,
কারণ মৃত আত্মায় তোমরা ভুল করেই ভুলে যাও
সহস্র হৃদয় কিভাবে খুন করতে হয়
আমি হিংস্র মানুষ আর নব্য-বাস্তবতাকে
কোন এক জলজ্যান্ত পশুর বিয়ে তে নিমন্ত্রণ করি ;
যেন পচা রক্ত মাংসের স্বাদ তাদের পাকস্থলী
আর শরীর জুড়ে ফুটে ওঠে বিক্ষোভের উত্তাপ ।
এসো হে মানব —
দেহের গঠনে তোমরা ভুলে যাও আমাকে
আর আমি হয়ে উঠি আস্ত এক জানোয়ার ।


কেন‘ইবা আমি এসেছিলাম পৃথিবীর মানুষের ভিড়ে ?
তবু নিজেকে খুঁজতে থাকি মানুষের ভিড়ে
আর খুঁজতে খুঁজতে হয়ে উঠি আড়ালের শয়তান ।
আমি খুনী আর নিজের  মৃত আত্মা নিয়ে মানুষের ভিড়ে জীবন খুঁজি
আর শয়তানি সব কর্মে লিপ্ত হয়ে নিজেকে করি ধ্বংস ।
কষ্ট থেকেই নষ্ট,  নষ্ট থেকেই ধ্বংস
আর ধ্বংস থেকেই ছড়ায় নতুন কোন কষ্ট
আর এভাবেই ডেকে আনে নিজেরাই নিজেদের মৃত্যুর ডাক


আমি পৃথিবীর শিশুদের ভয়ংকর চিৎকার শুনে
লোভ করি যেন যৌবনে তারা শয়তান না হয়
তবে যুগের বৃদ্ধ শয়তান ঘাড়ে চেপে বসে শিশুদের করে যৌবন ধ্বংস
মানুষেরাই আমাকে থামায় এই সভ্যতা থেকে,
আবার ভালোবাসার এক নির্মম বাস্তবতায়
অসহ্য তীব্র যন্ত্রণার ঘৃণা নিয়ে থাকি বেচে
ভয়ংকর সব মনুষ্যত্ব পুড়ছে অগ্নি লাভায়
আর আমি জানি তাদের পুড়িয়ে ফেলা হয়
কারো সাথে তারা ভাগ করতে চাইনা তাদের পোড়ানোর সুখ
এ কারণেই বলি তোমরা পুড়ো
এবং পুড়তে পুড়তে  হয়ে উঠো জ্বলন্ত এক দুঃসময়।
আমার মনুষ্যত্ব সেইসব শয়তানকে পুষতে চায়
যারা গিলে ফেলতে পারে এক আস্ত মানুষকে


বলো মানুষ, তোমরা যে পথে এগিয়ে চলো সে পথ ধ্বংসের পথ নয় কি ?
আধুনিক আর আধিপত্য নিয়ে তোমরা পথিকদের করো সাবধান
আর পথিকরা দিশেহারা হয়ে ভুল পথে হেটে মৃত্যু ডেকে আনে নিজ  হাতে।
যারা এসে ছিলো সম্পদের লোভে
তাদের হৃদয় গলিত মম এক দেউলিয়া খাদকের কাছে
তোমরা কি দেখতে পাও না আমার কবর ?
তোমরা কি দেখো না মৃতের কঙ্কাল ?
দেখবে কিভাবে তোমরা তো অন্ধ
আর অন্ধত্ব বিস্তার করে ভুল পথে মরো।


সবচেয়ে ভয়ংকর লাগে তোমাদের ভালোবাসার মুখুশধারী লোভ
আমাকে এমনভাবে ভালোবাসো যেন আগামীকাল তুমি নেই  ।
তোমার জন্যই তো প্রেম ভালোবাসা শিখেছিলাম ।
আমাকে ছুড়ে মারো অস্তিত্বের দুর্ভিক্ষের কাছে
আর মায়াময়ী মৃত্যুর দিকে ধাবিত করো
কারণ আমি আবারও ক্ষুদার্থ হৃদয় নিয়ে
তোমাদের মর্মের প্রেম ভালোবাসায় লোভী হতে চাই ।
হে ভালোবাসার লোভ — আমাকে অন্ধ করো না
কারণ আমি যেন মৃত্যুর আগে মৃত্যু কে বলতে পারি
" হ্যাঁ আমি জানি মানুষ নামের শয়তানেরা ভালোবাসা দিয়ে কিভাবে সহস্র হৃদয় মৃত্যুর দিকে ধাবিত করে এবং এই প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার নয়  "


তোমাদের অন্তর বড্ড নিকৃষ্ট
গিলে ফেলো নিজেদের মগজ নিজে রাই ।
আমি তো হাসতেই এসেছিলাম এই মাটির দেহ নিয়ে
পৃথিবীর মানুষরা আমাকে ফেলে দিলো মরণ গংগায়
কেন ফেললে আমাকে, আমি তো তোমাদের কেউ ছিলাম না ।
কেবলই চেয়েছিলাম পৃথিবীর নির্মম এক দেউলিয়া সফলতার আনন্দে নিজেকে উৎফুল্ল করতে
আর এখন তোমাদের শয়তানি সব ভালোবাসা
আমাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকে
শুধু মুখোশ পড়ানো আর মৃত্যুর দিকে ধাবিত করতে ।
এ জন্যই আমি মরিয়া হয়ে উঠি —
এই ভয়ংকর সব লোভ এবং অন্ধের পৃথিবী ছেড়ে নিজেকে নিয়ে পালাতে ;
কারণ আমি যা আছি তা থেকে আমি যা চাই তা হতে পারি না।
আমি তাদের মতো নয় যারা আসে আর যায়
আর আগামীর শয়তান হয়ে দেখা দেয়
যারা ছেড়ে গেলো তাদেরকে সত্য শিকার করি
মিথ্যা দেয় সাময়িকের মর্মান্তিক আনন্দ
প্রায়শ্চিত্ত কি করবে বেচে থাকার আগে
নাকি জীবন থেকে আফসোস নিয়ে কাটাবে
এবার বলো তোমরাই আমি অমানুষ,
আমি কি ক্ষতি করেছি তোমাদের
আবার তোমরাই ছুড়ে মারো অমানুষিকতা
আর ধিক্কার জানাও শয়তান বলে
তোমাদের কাছ থেকেই জেনেছি
কিভাবে দাঁত ও নখের চেয়ে ধারালো হতে হয়


আমার আক্ষেপ আমাকে আমার কবরে নিক্ষেপ করার অপেক্ষা
পৃথিবীতে এই অপেক্ষা না থাকলে কি ভাবেই বা জানতাম আমি বেচে ছিলাম
আর এই বেচে থাকার জন্যই পৃথিবী রেখেছে অসীমের সব পথ
যে পথে মৃত আত্মা রা সান্ত্বনা নিয়ে ফিরে যায়
আর আগামী দের বার্তা জানায় —
" বিদায় যত অগ্রসর হবে ঠিক তত অগ্রসরে তোমাদের মুক্তি মিলবে "