ছুঁয়ে দেখেছি ধ্বনিবিহীন রাত্রিতে,জেগে থাকা তারার সাক্ষ্যে নগরীর আকুঞ্চন মনখানি।
ট্রাম বাস জীপ্ লরি কোলাহল দিনমজুর অফিস অফিসযাত্রী বাজার রাজপথ,সব নিয়েএক অস্থির আওয়াজের সরণীতে দিন কাটে তার সবাকার অগোচরে।
মাথা পেতে নিয়েছে সে মানুষের কারসাজি।আবর্জনার ক্রূর চতুর হাসি মর্মে দিয়েছে দারুণ দাগা।লৌহ কপাটের প্রতিবন্ধে সৌরভের প্রবেশ নিষিদ্ধ।এক আহত মর্মের স্তব্ধ তটে বসে কাঁদে সে তাই।
বোঝে না এ সংসার তার বিপদের কথা।অন্ধ করে দিতে চায় বিষমাখা তীরের আঘাতে লক্ষ্মীশ্রীটুকু।
উঁচু দেয়াল আর আকাশ আড়াল করা ছাদের তলে বসতি গড়েছে মানুষ তন্ময় বিকারে।খোপ খোপ কুঠুরিতে নেই সত্যশুভ্র সকাল,নেই সূর্যাস্তের কৌতুক।গা-ঘেঁষাঘেঁষি বহুতল ভিড়ে সবকিছুই মাপাজোখা।পরিপাটি প্রসাধন..ছুঁতে দেয় না মাটির মায়া।পেতে দেয় না ঝুরঝুর বাতাসের অবাধ সততা।দম্ভ আর দীনতার রঙ্গমঞ্চ এক।
যারা তাকে চিনতো চিরকাল,আজ খুঁজে পায় না আর পূরোনো অবস্থানে।
এক থেকে অগনন আশারা নিথর হয়ে আছে উড়ালপুলের এক একটি স্তম্ভতলে।
গাছপালার মৃতশরীরে বসে না বসন্তপাখি।চলে গেছে তারা এই পীচে মোড়া পথের ফাঁপা গৌরব ছেড়ে।
তবে কি নিয়ে বাঁচবে শহর?? নবীন সৃষ্টির ক্ষমতা বুঝি মুছে দেয় এভাবে পুরোনোর প্রতিভাকে??
শুনেছি আমি তার মন ভাঙার আর্তরব!! সেই তার এক কথা,”কেন নেই ক্ষমতা আমার এই অসম্ভব বিস্বাদ বাণিজ্যকে রোখার।বিবেকহীনের ক্ষমতাজালে জড়িয়ে,হারিয়ে গেল প্রিয় সবুজের গরিমা।”
সুন্দরের হাহাকারে দিনের প্রহরগুলো তেষ্টায় মরে।রাত্রির চোখে দুঃস্বপ্ন বসায় থাবা।
উদ্ভ্রান্ত মেকি গৌরবে হে নগরবাসী,হারিয়েছো তুমি প্রাকৃতিক ঝকঝকে চাঁদ।
তোমার চেয়ে হতভাগ্য আর কে আছে জানা নেই।
এই উপভোগ সুখী করে না অনন্ত অবিরাম।
সারি সারি বিজ্ঞাপনের ফলক প্রবঞ্চিত করেছে তোমাদের জ্যোৎস্নার জড়োয়া পেতে।
পেট্রোল আর ডিজেল-ধোঁয়ার আঁধারে অজান্তে দীক্ষা নিয়েছো অবসাদের।
হুজুগে গড়ছো হেমলকের সমাজ।
অবোধ চৈতন্যের ঘুঁটি মেলাতে পারবে না তোমাদের জীবনের জটিল ছক।
নির্বিকারের পরিসংখ্যানে তবে কে আর আছো তিলোত্তমার বিলাপ শোনার জন্যে??