গৌরব স্মৃতির মখমলি পাতাগুলো ওলটাতে ওলটাতে আমি পৌঁছে গিয়েছি আমার প্রফুল্ল প্রিয় অন্ধকারের কাছে।
মাথার ওপর আকাশ জুড়ে তারার ফুল।
সুসজ্জিতা আঁধার আমার।
এখন যে লোডশেডিং!!
এই দৃশ্য দেখার বেপরোয়া টানে নিষ্পলক আমি টুকটুক করে ঘুরে বেড়াচ্ছি ছেলেবেলাকার উঠোনে।
আচ্ছা,একটু পিছনে হেঁটে দেখতেও তো ইচ্ছে হয়,  হয় না কি? তাই তো ঊর্ধশ্বাসে ছুটে যাওয়া!
নিত্য অন্ধকারের খুশিয়াল উৎসবে সামিল হওয়া।
প্রিয় আঁধারের ঐশ্বর্য আয়োজনে বক্ষে জাগে দুরু দুরু তাল।জ্যোৎস্নারাতের লক্ষ্মীমন্ত আঁধার,চাঁদের রূপো-রঙের আলো উঠোনে থৈ থৈ করা,ঠাকুমা শোনাচ্ছেন দেশের বাড়ির গপ্পো।
মায়া মায়া বাড়ি..ঝিমুনি এসে যায়।
শান-বাঁধানো বারান্দার কোণায় রেখে দেওয়া হালকা আঁচের লন্ঠন থেকে মাঝে মধ্যে কেরোসিনের গন্ধ ভাসে।
রান্নাশালে নিয়ম-মাফিক ডাল ভাতের আয়োজনে ব্যস্ত আমার মা।
মাদুরখানা বিছিয়ে বসে প্রিয় আঁধারের নিবিড় স্পর্শ পাওয়া চিরপ্রেম।
একটু দূর দিয়ে যে রেলের লাইন গেছে সেখান দিয়ে প্রাত্যহিকে ট্রেন ছুটে যায় একটি দুটি।নিয়ে যায় মনকে অন্য দেশে কেড়ে।
এ আঁধার সাময়িক,কিন্তু আকর্ষণ চিরকালীন।
ঐ ফেলে আসা কেরোসিনের গন্ধে ভরা বাতাসটার মতো সুবাস আজ আর না পাই।লোডশেডিং এখন বারোমাস আমাদের অন্তর জুড়ে।
কিছু নেই,কেউ নেই আর! ঝাঁ চকচকে প্রযুক্তির দাপটে ঐ পূর্ণিমা কখন যে এসে চলে যায় অবহেলায় কে জানে!
শুধু স্মৃতিময় সাঁতারু মন জীবন নদীতে উজান বায় দৈনিক।
কতদিন পাবে শক্তি? স্মৃতিরও যে বয়স বাড়ে!