প্রশ্ন রাখি চোখভরা নীল তরুণ শরৎ মেঘে
ভেসেছ কোথায়, প্রমোদ প্রাণে জেগে?
আমার মন আছে যে ঘরের দাওয়ায়, শিউলি তলায়, শান্ত দীঘির পাড়ে
উতল করা কি যেন সুর হাওয়ার স্তরে স্তরে,
সেই আকাশে দিচ্ছ পাড়ি শুভ্র নরম সুখে?
শুনবে সেথায় গুন গুন সুর আমার মায়ের বুকে।
অগাধ হৃদয় পাড়াপড়শি মাটির ঘরে শিল্প,
গৃহের গায়ে আলপনা এঁকে রৌদ্র শোনায় গল্প।
স্রোতস্বিনী মিঠেল বাতাস বনভূমি নদীতীর,
মাধবীলতার অপরূপ সাজে প্রাঙ্গণ অস্থির।
সেই আলয়ে ঘুম ভাঙে মোর শিশিরের টুপটাপে,
বিচ্ছেদ নেই অনন্ত মিল প্রফুল্ল সুখতাপে।
চিরচেনা সেই কিংশুক লাল আটপৌরে আশা,
জড়াজড়ি মন ডালিমের বন থৈ থৈ সুখী বাসা।
আটখানা হই আহ্লাদে ভিজে এই তো আমার বাড়ি,
অমর প্রেরণা হৃদয়ের কাছে গোপনে কইতে পারি।
মখমলি মাটি পৃথিবীর মাঠে গাছপালা ঝেঁপে ফুল
হৈ হৈ হাওয়া আছড়ে পড়ে ছাপিয়ে হৃদির কূল ।
ওই মাটিতেই প্রাণের শিকড় প্রতাপে মেলেছে শাখা,
আঁচলটুকু দিয়েছে মেলে নিখিল মমতা মাখা।
আমার দেশে রোদ বৃষ্টি ভিজে হয়ে থাকে মন,
হিমের রাতে জ্যোৎস্না ফুটে পরিবেশ তপোবন।
বিকেলি আকাশ সিঁদুর রাঙা ভূবন চষে চাষী,
পরিতৃপ্ত শিশুর মুখে কুন্দ ফুলের হাসি।
বাতাবি লেবুর গন্ধে মেতে উচ্ছ্বসিত গাছ,
ধানভানে বধূ, রান্নাশালে মৃদু উনুনের আঁচ।
এই তো আমার চেনা পৃথিবী যাবজ্জীবন টানে,
দালান কোঠায় গুমরে উঠি অন্তর্যামী জানে।
ফিরে কি পাব সুগন্ধি দিন আকাঙ্খা মন ধূ ধূ,
স্মৃতির ভিতরে ডালপালাগুলি হাতছানি দেয় শুধু।
ভালোবাসাগুলি কাজল হয়ে আঁখি তে করে বাস,
আমার বুকে সঘন আবেগ তোলপাড় বারোমাস ।