অনেক বছর আগে প্রাচীনকে ওরা ফেলে এসেছে
অরণ্যের গভীরে। আমি তখন জন্মাই নি।


কিছুদিন আগে আমার প্রেমিক আমাকে ছেড়ে গেছে।
আমি ওকে ভীষন ভালবাসতাম।
ও ভালবাসতো আমার নারীত্বকে,
ভালবাসতো আমার পাতলা শাড়ীর আঁচলকে।
আমার দ্বিধাহীন বিশ্বাসের হাতে হাত রেখে নয়
ও আমার বুকে মাথা রেখে বাঁচতে চাইতো।
এইভাবে ‘বাঁচা’কে ঘৃণা করি বলে
আমি আমার বুকটাকে পুড়িয়ে দিতে চেয়েছিলাম।
জন্ম-প্রায়শ্চিত্যের সেই আগুন
আজও আমার বুকে জ্বলছে।
এখন আর আমি কোনো মানুষকে ভালবাসি না
ভালবাসি ভালবাসাকে।


বাস্তবের দূর্বলতম সিঁড়ির পাদানিতে পা রেখে
মনে হয় জীবনটা ভীষন টলটল করছে।
সামনে-পিছনে-ডানে-বাঁয়ে শুধুই লালসা আর স্বার্থের সংকীর্নতা।
চাই না আর এ সভ্যতা।
আজ ভীষন ইচ্ছা করে আমার বৈধ মাতৃত্বকে
কোনো পতিতা-সন্তানের বুকে রেখে
হারিয়ে যেতে।


আকাশের উদারতা ছুঁয়ে নীল সাগরে সত্যি একদিন
হারিয়ে যেতে গিয়ে দেখলাম—
আমি এক অরণ্যে এসে পড়েছি।
সেই অরণ্যের গভীরে অনেকের সঙ্গে
আমার প্রেমিককে দেখলাম।
কোনো এক নারীর পা’য়ে মাথা রেখে বেঁচে আছে।
আমার জানা ছিল না অনেক বছর আগে
প্রাচীনতাকে ওরা ফেলে গিয়েছিল এই বনাঞ্চলে।


তুমি বেঁচে থাকো আদিমতা।
আমি তোমার কাছেই ফিরে আসবো।
ওদের সভ্য জীবন থেকে পাওয়া
আমার বুকের আগুনটা নিভিয়ে আসি……


২০শে মার্চ’১৯৯৬/বসন্তপুর