দীর্ঘদিন জমে থাকা অভিমানের আকাশ আজও পুরনো অন্ধকারে! অবসন্ন মায়ামুক্ত জীবনের পিছে বহুদূর হেঁটেহুঁটে মৃত্যুর দুয়ারে গিয়ে দেখি আজও সেই জাহান্নাম! কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন বুকে নিয়ে ধীর চলতে-ফিরতে গিয়ে দেখি বুকের বেড়িবাঁধে আজ ব্যথার অবাধ বসতি! খালি পায়ে খোলা আকাশের কাছে বন্ধ চোখের শ্বাস নিতে গিয়ে শুনি একটা একটা নক্ষত্র পতনের দীর্ঘশ্বাস।

দুঃখ বিক্রি হওয়া এক দূরের শহরে একদিন দৌড়ে ছুটে কোনরকম গিয়ে দেখি অগোছালো দুঃখ গত বসন্ত থেকে ওরা আর নেয় না। আমার গোছালো বলতে কিছুই নেই একটা কবিতা ছাড়া! কিন্তু এই শহরে কবিতা বিক্রি হয় না অনেক বছর হলো। কবিতা এখন এই শহরের ধুলোবালির আবরণে পড়ে থাকা পুরনো কাগজের ছেঁড়াছুড়া মলিন পৃষ্ঠা! অভিমানের মগজ দেয়ালে খোদাই করে কে যেন লিখে গেছে– 'পুরনো কষ্ট পাবার ভয়ে এখানে কেউ দুঃখের কবিতা পাঠ করে না।' কিন্তু আমার তো কোনো সুখপাঠ্য কবিতাও নেই! কি যে করি! কোথায় যাই?

আমি বরং এই শহর ছেড়ে চলে যাই আরও দূরে কোথাও!
গহীন অন্ধকার লেগে থাকা অসামান্য আকাশের নিচে হাঁটতে হাঁটতে দুবলাঘাসের মেঠোপ্রান্তে একটা শান্ত
পুকুর ধারে ঝিম মেরে বসি। দেখি নিস্তব্ধ রাতের বিচিত্র
জোনাকিপোকার দল মাঝ পুকুরে উড়ে উড়ে কলাপাতার নরম ডগায় এসে সুখের বিশ্রাম করে! তাদের আবহমান ছুটে চলা জীবনে আনন্দময় বিশ্রাম আছে; আমার নেই! আমি উন্মাতাল নদীর ঘাটে গিয়ে সমুদ্রকে আমার সকল দুঃখের দ্রোহ ঝেড়ে দিব ভেবে গিয়ে দেখি সমুদ্রেও এখন ভাটা!
অপেক্ষা করি; অভিমানের দিন ফুরোলে দুঃখগুলো গোছগাছ করে চলে যাব মহাকালে; নক্ষত্রদের ভিড়ে!