এই শহরেই, তেতিয়ে ওঠা পীচ ঢালা রাস্তায়
কারো কারো ঘাম ঝরে কপালের চিবুক বেয়ে
কারো কারো ঘাম শুকায় শীতল বায়ুর যন্ত্রখানায়
কেউ কেউ বাথটাবে নিজেকে হারায় সুখটানে।


এই শহরেই, প্রেমিকার লাল ঠোঁট হারায়
লোমশ বুকে ঠোঁটের আঁকা  চিত্রকলায়
আবার কারো কারো ঠোঁট লাল হয়
খদ্দের আশায়, অচেনা লোমশ বুকে ক্ষণিকের
চিত্রকলায়, গুমরে কেঁদে ওঠে অন্তর্ভেদী ভালবাসায়
নাড়ীর বুভুক্ষু অগ্নিতে নারী সত্তার ক্ষয় হয়।


এই শহরেই, শরাব টেবিলে সত্যে মিথ্যার কলতানে
টাকা উড়ে বেহিসাবী খতিয়ানের কোলাহলে
সর্বহারার ক্ষুধার খতিয়ান চলে যায় মাইক্রোসকোপে
এক টাকা দানেও লাগে সিএ বাবু'র কাগুজে ফয়সালা।


এই শহরেই, গোলাপ শিশুরা দুধের পেয়ালা ছুঁড়ে
পিতামাতার পকেট কাটে ফাস্ট ফুডে, জাঙ্ক ফুডে
ঝড়ে পড়া গোলাপ শিশুরা তেতিয়ে ওঠা রাজপথে
নগ্ন পায়ে ছুটে চলে কাঁচ ঘেরা শিশুদের যানে
গোলাপ মিলানোর পাজলে ক্ষুধার কয়েন জোটায়
একটু উদরপূর্তিতেই চোখ মেলে তারা ভরা আসমানে।


এই শহরেই, ধর্মের লেবাসে ভন্ড প্রতারকেরা
কখনো কখনো প্রমোদে বালক কিংবা
উপভোগ্য কাউকে গনিমতের মাল বানায়।
তাদের ওয়াজে অস্পৃশ্য এক জীবের কথা কয়
নরক যন্ত্রনার বয়ানে, লালসার আগুন ঝরায়
শিক্ষিতেরা স্বর্গের বাসরে তাদেরই গান গায়।


এই শহরেই, এখনো ভেসে বেড়ায় সুরেলা
বাঁশীর সুর, ইথার তরঙ্গ বাধা পায় দূষণ বায়ুর
আর ইমারতের ইটেরা শুষতে থাকে সবটুকু সুর।
তবু সে সুরেলা সুর কারো কারো কানে পৌঁছে
মহাজাগতিক সুখের ভেলায়, অন্যরা যখন
চিন্তিত-প্রমোশন, ব্যাবসায় লাভ-ক্ষতি, প্রেমিকের
লিপিষ্টিকের খরচের লাল-বেগুনির রং ছায়ায়,
এই শহরেই, একদল শহুরে বাশীঁওয়ালারা
বেঁচে থাকার আশানিয়ার সুর বাতাসে ছড়ায়,
শোনার মত মন থাকলে, কানে ঢেউ তোলে ঝর্ণার।