ধোঁয়াচ্ছন্ন আকাশের সুড়ঙ্গ পথ বেয়ে নেমে আসে এক আগন্তুক,
অদ্ভুত ধরণের একটি আওয়াজ বাতাসে ভাসছে তাকে ঘিরে
মাদকতাময় একটি গন্ধ ছড়াচ্ছে আশপাশ থেকে,
উস্কোখুস্কো চুল, গায়ে আস্তিন গোটানো ঢিলেঢালা অদ্ভুত এক জামা,
অনাহারী শুকনো মুখ, হাড় জিরজিরে শরীর,
বিকলাঙ্গ চাদরে মোড়ানো একটি মজলুম রহস্যময় অস্তিত্ব,
পক্ষাঘাতগ্রস্ত গহ্বরে কুঁচকানো মুখভর্তি নীরবতা,
চোখে যেন অস্তিত্বের পোড়া আগুন ঠিকরে বেরুচ্ছে,
কুঁজো পিঠ, যেন অভিশপ্ত অর্ন্তকলহের নিষ্পেষণে ক্লান্ত
অদেখা এক ভৌতিক ভঙ্গিতে ইতস্তত হাঁটছে রাজপথ ধরে।


কৌতুহলী অথচ হতবিহ্বল মানুষের ভীতিকর চাহনী তাকে ঘিরে,
ইথার থেকে কারা তাকে একের পর এক প্রশ্ন করে যাচ্ছে
প্রশ্নবানে জর্জরিত আগন্তুক অদ্ভুত স্বরে কথা বলে ওঠে-
আমি বিগত চার যুগ আনন্দিত সূর্যোদয় দেখিনি,
বরং লজ্জাময় পরিণতির হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে আজন্ম হাঁটছি;
হঠাৎ ময়লা ছেড়া ঝোলা থেকে বের করে উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে
টকটকে লাল গোলাপ ছিটিয়ে দেয়, আর দীপ্ত কণ্ঠে বলতে থাকে,
এটি গোলাপের নিজস্ব কোন রঙ নয়, সে কোটি মানুষের রক্ত থেকে ছিঁড়ে এসেছে,
বঞ্চিত মানুষের রক্তের রঙ মেখে এটি লাল হয়েছে।
এতোকাল তোমরা গোলাপের সৌন্দর্য বর্ণনায় যে মধুর ও মায়াময় শব্দগুলো শুনতে
সেগুলো ছিলো ভ্রান্ত কিছু দেশপ্রেমিকের কাছ থেকে ভাড়া করা শব্দ।
উপস্থিত জনতা তাকে বার বার জিজ্ঞেস করতে থাকে
তোমার কথা আমরা সবই বুঝতে পারছি, কিন্তু তোমার পরিচয় কি!
আগন্তুক আবারো দীপ্ত কণ্ঠে উত্তর দেয়
আমার নাম বাংলাদেশ!
-----------------------------------------------------------------
[প্রচন্ড ব্যস্ততার কারণে গত ছয়দিন বন্ধুদের কবিতা পড়তে পারিনি বলে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।]