চলে গেলে পিছন ফিরে ঘর বন্ধ করে তালাটা দুবার টেনে। মুঠো ভরা পলাশ ফুল গুলো ভুলে গেলে ঘরের বাইরে ফেলে দিতে। ঘর ভরা শূন্যতা ফেলে রেখে গেলে। সবাই কে ফাঁকি দিলেও আমায় পারো নি তোমার চোখের কোলে জ্বলে ওঠা মুক্তো আমি দেখেছি। কেউ ত ছিল না কেন গাড়ি ছেড়ে যাবার সময় পিছন ফিরে দেখলে? আমি দেখেছি চৌকাঠে দাঁড়িয়ে। হাত তুলে টাটা করতে পারি নি। খুব কাঁদছিলাম। চোখ মুছছিলাম। বারবার ঝাপসা হয়ে যাচ্ছিল চোখ টা। তোমায় দেখতে দেখতে তুমি কেমন ধোঁয়া হয়ে মিলিয়ে গেলে। কার কাছে কাঁদব?কাকে বলব? এখন আমি একটু বড় হয়েছি। বুঝতে শিখেছি।ট্রেন ঢুকল। তোমার চলা দেখেই আমি বুঝতে পারছিলাম তুমি পারছো না। তোমার তাড়াতাড়ি যেতে কষ্ট হচ্ছে। তবু পিছন পিছন চলেছ কাঁধে একটা ব্যাগ নিয়ে। সিট খুঁজে বসা অবধি যেটুকু সময়। তারপর আবার আমায় নিয়ে বসলে তোমার বুকে। তোমার ভাবনায় সেই আমায় ছেড়ে আসার আক্ষেপ। । নিঃশব্দে ছেড়ে দিল ট্রেন। যাই নি আমি স্টেশনে। ঐ মুহূর্ত টা বড্ড কষ্টের। ট্রেন ছেড়ে দিলেই শূন্যতা বিন্দু থেকে সিন্ধু হতে চায়। তার চেয়ে একটু সইয়ে নিয়ে অপেক্ষা করা ভাল। কিরকম নিঃশব্দে সরে যাওয়া। পশ্চাদপসরণ আমার থেকে। কারণ আমার থেকে কখনও তুমি যে সশব্দে সরে যেতে পারবে না। অত ক্ষমতা তোমায় ঈশ্বর দেয় নি।
তুমি চলে যাবার প্রথম প্রথম কয়েক ঘন্টা আমি কিছুই করতে পারি নি। শুয়ে ছিলাম। যে বিছানাটায় তুমি শুয়ে থাকো। তোমার গন্ধ নিচ্ছিলাম বুক ভরে। তোমার অশরীরী অস্তিত্ব টা অনুভব করতে চাইছিলাম । সারা ঘরে তখনও টাটকা তুমি । কে যেন একটা এসে বাইরে ডাকাডাকি করছিল । আমি খুলি নি দরজা। আজ ত তুমি নেই তাও কেন....?  উঠলাম ঘন্টা দেড়েক পর। লাল চোখ । পায়ে পায়ে পৌছলাম ফ্রিজের কাছে। কিছু খাব খিদে পেয়েছে যে বড়। এই ত সুযোগ। কত কত রান্না কর তুমি আমার সাথে। ফ্রিজ খুলে দেখি ফাঁকা। আবার বুকটা মোচড় দিয়ে উঠল। তুমি ত আজকে ফিরবে না। আগামী বেশ কয়েকদিন ও না। তাই কিছুই রাখো নি। আমি যে ঘরেই আছি তা তোমার মনেই নেই। পারি নি তোমায় ছেড়ে দূরে যেতে।আমি যে তোমারই ফেলে যাওয়া "মন"..


শ্রী।