( একটি গদ্য কবিতা)


ইজেল কালি তুলি হাতে এই পৃথিবীর পিঠে অখ্যাত এক চিত্রকর  এসেছিলাম আমি ।
ওগুলো হাতে দিয়ে কে যেন বলে গেল কানে কানে এসে - " পারিস না পারিস যাই পারিস তুই আঁকতে যে তোকে হবেই হবে।
পরে এসে একদিন দেখে নেব আঁকা তোর, নিয়ে যাব তোকে।"
সামনে দেখি পড়ে আছে ফাঁকা একটা বোর্ড, ওপরে লেখা তার " জীবন চিত্তির "
আমিও এক বেকুফ , এঁকেই চলেছি যত হিজিবিজি সেই কবে থেকে।
কাগজের নৌকো চাঁদ তারা পরী, পদ্মদিঘী মরাল কল্মিলতায় জল ফড়িং,
শান্ত নদীর দুধারে কাশবন ধান ক্ষেত সাদা বক দুস্টু প্রজাপতিরা করে আনাগোনা,
ছোট্ট সোনার তরীতে আমার ভাল লাগা পুতুল, লালটিপ গলায় হার মাথায় কুন্দ ফুল,
নদীর ধারে নিকোনো মাটির ঘর, বেড়ার ফাঁক দিয়ে একশটা চাঁদ জোৎস্না নিয়ে খেলে ঐ নিকোনো  ঘরময়।
কত কিছু আরও আরও কত কিছু .....


ওরা সব রোদ্দুরে যায় পুড়ে, পড়ে থাকে রং চটা ঝলসানো  যত আঁকা ঝোঁকা ,
বৃষ্টি জলে গলে যায় সাজ পোশাক রং।
ভাল করে তাকিয়ে দেখি কখন যেন সারা মুখে নীল কালো লাল কালি ঝুলি মাখা , আমি হয়ে গেছি সং!
আর আমার সামনের বোর্ড টাতে এখন কি সব অস্পষ্ট হিজিবিজি।
কিচ্ছু আর আঁকতে চাইছেনা ক্লান্ত হাতের আঙুলগুলো,
ছবির নৌকোটা দেখি মুখ থুবড়ে পড়ে আছে একটা নদীর বাঁকে ,হাল ভাঙা , আধ ডোবা হয়ে জলে।
বিকেলের ভাঙা রোদ্দুরের লাল আলো এসে পড়েছে অবোধ্য ছবিটার উপর ,
ইজেলের রংও প্রায় শেষ - আমিও শুকনো রং তুলি হাতে ...


একটা গানের কলি বার বার বাজছে কানে কানে, জানিনা কেন


শুধু যাওয়া আসা, শুধু স্রোতে ভাসা ...
_________________________


অমিতাভ শূর (২৪.৭.১৮)