কে রে? রেল পথের ধারে ভোর-রাতে করে কান্না
আসিয়া অন্তরে বিঁধে- দুঃখ-সুখের বন্যা।
কে গো ভিখারিণী!
পতি-দুলাল নেই কি? তোমার শূন্য এ ধরণী?
ভিখারি দুঃখ-সুখে
দু’বাহু হাতুরি তার- বার বার ঠুকে তাই বুকে।
আমি দুলাল হারিয়েছি নেশা ত্রাস মাঝে
সেই দুঃখের বাঁজনা ধব ধব বক্ষে শন শন বাঁজে।
আমি ভুলিতে পারিনি প্রিয়হারা দুঃখ
উত্তপ্ত মরুস্থল পুঁড়ে জ্যান্ত মরা এই বক্ষ।
মোর তনয়—
যেদিন ছাড়িয়া গিয়াছিল আমার ছোট নিলয়।
সেই হাসি হাসি মুখ ভরা আকুল মুখ
পূর্ব গগনে উঠেছিল যেন নব-নৃত্যে সুরুজ।
সেই ভাবনায় কেঁটে যার মোর দিন-রাত
ক’সাতদিন যায়নি পেটে কে জানে ভাত।
ফাঁকা পেটে চলিব আর ক’দিন জীবনে
নেশা যদি উঠিত সুখ পেতাম তবুও ভুবনে।
কাঁদিয়া কাঁদিয়া ভিখারিণী কয় এ কথা
শত দুঃখ বোধয় বিঁধে আছে বক্ষে ব্যথা।
ঘুরে ঘুরে ফিরে বাংলার বাড়ি বাড়ি
ক্ষুধার যন্ত্রনা ভুলে গেল- সেই সন্তান দ্বারী।
তার বুকের ভিতর লড়াই- আবেগ সনে
প্রিয় হারার প্রতিশোধ- তুলিবই জীবনে।
কান্নাহীন-নেই বুকে সুখের সুখ- বাণী
ওরে কেমন নেশা নামিল হায়! এ ধরণী।
যায় নি কেহ সাহায্য করিতে তার পাশে
এ আসমানি-বোধয় এসেছে মানুষ বেশে।
সে দিন বেলা,
চুপ করে বসে ভাবে ভাসাবে সিন্ধ্যে ভ্যালা।
দিব জীবন, দিব প্রাণ, মায়া ছেড়ে ধরণী
বাঁজাব এবার ওরে নেশা মুক্তির জয় বাণী।
জেগে জেগে স্বপ্ন ভরা- নাহি তার প্রত্যাশা
ক্ষীণ তনু তাই, খুঁজে পাই নি যুদ্ধের দিশা।
তাই কাঁদিয়া দুঃখে বলে, যা আছে ভীরু
ভিতরে ভয়ে ভরা- উপরে আমি বলে হিরো।
ভাবতে ভাবতে যা আরো ক’সাত দিন
শুকনো শরীর হাড় ভেসে মরন চিন।
হায় রে ভীরুর দল! আরো র বদ্ধ ঘরে
এমন সময় আসবে পালাবে সব দৌঁড়ে।
তোরা আদি বাঙ্গালীর কলঙ্গনী সন্তান
কেন?স্রষ্টা তোমায় করেনি কি শক্তি দান?
বসে বসে খেয়ে যাও মজার সাজনার ঝুল
মানুষের জন্য করো নি কেন- ফাউন্ডাল জুল।
ভয়ে তোমার হৃদয় কাঁপে- নাকি তিরোধান
জেগে তুলো ভীরুর দল- বাঙ্গালির শক্তি দান।
দেশ জোরে পারি নি কাজ- যুবকের ধ্বনি
গাহিয়া যাও মুক্তির গান- ওরে রণ বিবাগী।