যৌতুক


কতদিন ডাকিসনা দিদি নিসনা তুই খোঁজ
বলনারে এবার দিদি কি হয়েছিল তোর ?
কি হয়েছিল তোর বলনা দিদি ভাবি আমি রোজ
কত লক্ষ একাকী রাত জেগে হয়েছে ভোর l


রাত্রি মাঝে যখন পেঁচার  ডাকে
আর বিদঘুটে সব শব্দ থাকে
ঘুম নেই আজও দিদি আমার দুই চোখ জাগে
বছর বয়স বেড়েছে শুধুই সময় হওয়ার আগে।


মনে পড়ে


জুঁই, চাঁপা তোর খোঁপায় পেলে
সুগন্ধে মাতানো মন উঠতো দুলে
ছুটে এসে  আঙ্গুল ধরে তুই নিতিস তুলে
বলনা দিদি কেনো গেলি আমাদের ফেলে।


কোই রে দিদি তুই নিসনাতো খোঁজ আর
সেই ছোট্ট বেলায় মনে পড়ে তুই বিয়ের দিন
আমার কাঁধে মাথা ঠেকিয়ে কেঁদেছিলি সেবার
আমি বুঝিনি সেদিন এক গভীর মর্ম ছিল তার।


শুনেছিলাম তোর শ্বশুরবাড়ি মস্ত বড়োলোক
আমি ছিলাম তখন এক ছোট অবুঝ বালক
বাপ্ মায়ের নজর ছিল অনেক অনেক উঁচু
এখন তাই একলা ভাবি মাথা করে নিচু l


একটা চিঠি এসেছিলো বছর কয়েক পরে
আগুন ভরা শব্দগুলো আগুনে গেছে পুড়ে !
সবশেষের শেষ  লেখায়  রক্তেমাখা তুই
একলা ঘরে ছিলো পড়ে গন্ধহীনা জুঁই l


চিঠিটা ছিলো বারুদ ভরা, পুড়ে ছিলো সব
বাবার দেহ নিথর হলো নেই আর কলরব
নিয়তি দিলো পোড়া মন পোড়া কাঠের গন্ধ
মাও বাঁচেনি আর বেশিদিন জীবন দুয়ার বন্ধ।


এমন আরো অনেক গল্প পড়ে আছে চাপা
আমাদের এ সংসারের ধনী গরিবের রেখা
সিকির অঙ্কে গিয়েছে বিকি কত যৌতুকের বৌ
সত্তর বছর পরেও তারা স্বাধীন হইনি কেউ l


এমন আরো অনেক দিদি আছে যারা শশুর ঘরে
টাকার অংকে বিয়ের খেলা প্রাণ নিয়েছে  কেড়ে।
সত্তর বছর পরেও লোভী, টাকার গোলাম যারা
স্বাধীনতার মর্ম বুঝিনি আজও বুঝিয়ে দেবেন করা?