স্বাধীনতা!
তোমাকে চেয়েছিলাম,
শত্রুর নিষ্ঠুর আঘাতে তোমাকে স্মরেছিলাম-
আমি চেয়েছিলাম, তুমি আস
এ সবুজ শ্যামল বাংলাকে ভালবাস।
আমার আমি কে ভালোবাস।।
আমি যে আজন্ম ক্রীতদাসী-
তোমায়, তোমার প্রতিক্ষা ও  ভালোবাসি;বড় বেশি।


স্বাধীনতা!
ওরা আমার মুখের ভাষা পাল্টে দিতে চেয়েছিল,
আমার ছেলেরা_রফিক, শফিক তা হতে দেয়নি
আমার বুকেই ওদের তাজা প্রাণ
দিয়েছে ,কিনে নিয়েছে বাংলাকে।।


স্বাধীনতা!
ওরা আমার সব কেড়ে নিয়েছিল_
ওরা আমাকে অসহ্য নির্যাতন করেছিল,
বাঁচার মতো কিছুই আমার ছিলো না;
আমি যে আজন্ম ক্রীতদাসী_
ওরা আমার মুমূর্ষু নিঃশ্বাস ও কেড়ে নিতে চেয়েছিলো,
আমি দুমড়ে, মুচড়ে, ভেঙ্গে,চিরে,ফেড়ে, চৌচির হয়ে ছিলাম।
কিন্তু ওরা আমাকে আর আমার তেজস্মিদের একদমই নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল।


স্বাধীনতা!
আমার ছেলেরা অনেক দিন ধরে
তোমাকে চাইছিল, আমার চৌচির দেহের এক পশরা শান্তি ওরা চেয়েছিল_
ওরা অনেক চেষ্টা করেছিল ... অনেক... অনেক
কিন্তু প্রত্যক্ষফল ওরা কিছুই পাইনি
ওদের সাথে বারবার প্রতারনা করেছিল,ঐ হায়েনারা
ঐ মিথ্যুক ,ঐ পাপিষ্ঠের দল।


স্বাধীনতা!
আমার ছেলেরা আমায় বলেছিল:
মা যুদ্ধে যাব, তোমাকে মুক্ত করব মা!
আমি আঁতকে উঠেছিলাম, বলেছিলাম:
না বাবা না, আমার কিচ্ছু হবেনা, আমার কিছুই হয়নি দেখ; আমার কিছুই হয়নি
আমি কিছুতেই ওদের যাওয়া মেনে নিতে পারছিলাম
না, আমি জানতাম যুদ্ধ কি! কেমন তার বিভৎসতা!
ওই হায়েনার রণে কিছুতেই আমার ছেলেদের যেতে দিচ্ছিলাম না।
ওরা আমায় বলেছিল:
অত ভালোবেস না মা,
ভালোবাসা দিলে মা মরে যায়-
তোমাকে যে মরতে দিব না, মা।
আমি চোখ মুছে নিয়েছিলাম,
ছেলেদের যুদ্ধে যাওয়া_আমার খুব কষ্ট হচ্ছিলো
আমার ইচ্ছা করছিলো-ওদেরে আরেকবার
বুকে জড়িয়ে ধরতে-আমার খুবই কষ্ট হচ্ছিলো
সে অসহ্য কষ্ট, আমি সহ্য করতে পেরেছছিলাম।


আমি যে আজন্ম ক্রীতদাসী-
ওরা আমাকে বলেছিল, ভয় নেই মা-
আমারা তোমাকে হারাবো না, কোনদিনই
না, আমি ঈষৎ হেসেছিলাম বিদায়ে।


স্বাধীনতা!
ওরা তোমাকে নিয়েই এসেছে, তবে আমার সব ছেলেরা আসেনি
কেউ হারিয়েছে চোখ,কেউ হাত -
কেউ পা, অনেক কিছুই হারিয়েছে ,কেউ ই অক্ষত নেই।
তবু আমি ওদের স্নেহের পরশ দিতে পারিনি
আমার অনেক ছেলেই শহীদ হয়েছে-
আমি মূর্ছা ছিলাম, আমি শোকাচ্ছন্ন ছিলাম।


স্বাধীনতা!