১.
আধ ঘন্টা যাবত আকাশে মায়ের হাতে বানানো রুটিটি দেখা যাচ্ছে না!
নিজের মনকে হামাগুড়ি দিয়ে ঘুমুতে গেলাম,
গোলহীন পৃথিবীতে আমার প্রথম হেমন্ত মাস আমি কিঞ্চিৎ দুঃখ নিয়ে আমার মেরুদণ্ড সেগুন গাছের কাঠের সাথে মিশিয়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম।
২.      
এই ঘটনার আট পাঁচ এক দিন আগে আমার মায়ের হাতে বানানো রুটি, যে রুটি রাতে পৃথিবীকে আলো দেয়, সে রুটি আমাকে অবশ্য কিছুটা ইঙ্গিত দিয়েছিলো, যে সামনে একদিন আমি মাথা উচু করে তাকে দেখতে পাবো না। আমি ধরতে পারিনি, কারণ আমি আমার মা'র হারানো ভোটার আইডিকার্ডটি হাতে পেয়েছিলাম, সেখানে মা'র ছবিটি দেখতে দেখতে কেমনে জানি দিনগুলো চলে গেলো, আজকাল সময়ের যা দুরবস্থা, আমার মা ঐ রুটি যেদিন বানিয়েছিল ওদিন আমি বাড়ির উঠুনে পানি ছাড়া সাতরাচ্ছিলাম, আমাকে ধরতে গিয়ে আমার মার বানানো রুটিটি মধ্যখানে পুড়ে গিয়েছিল আর নিন্দুকেরা বলেছিল ঐখানে নাকি বুড়ি বাস করে।
৩.
১৯৬৯ সাল ২০ শে জুলাই সকাল নয়টা আমি ঘুম থেকে উঠে দেখালাম ইওেফাক পএিকায় খবর ছাপলো কারা যেন আমার মায়ের বানানো রুটিটি খাওয়ার জন্য দরজা ধাক্কা দিচ্ছে, তিনজন মানুষ প্রথম জনের নাম এখন নিলাম না।
৪.
পরে জানতে পারি প্রথম জন যে আমার দরজা ধাক্কা দিয়েছিল তার নাম নিল আর্মস্ট্রং,
তারপর থানা পুলিশের কথা মাথায় আসলো,
থানায় যাওয়ার আগে পাশের বাসার ফারুক এসআই এর কথা মাথায় আসলো..তাকে সব খুলে বললাম তিনি জানালেন আমাদের গ্রামের পুলিশের এত শক্তি নেই তিনি ঢাকা যাওয়ার পরামর্শ দিলেন.. আমি রোববার ভোরে রওনা দিলাম..
৫.
ঢাকা যেয়ে জানতে পারি, নিল আর্মস্ট্রংকে ধরার শক্তি দেশের সরকারের নাই.. আমি গ্রামে  ফিরে এলাম.. খোদার কাছে বিচার চাইতে চাইতে আমি ঘুমিয়ে পরলাম.. আমার ঘুম ভাঙ্গলো মাটি ও সূর্য যখন মুখোমুখি অতএব যখন দুপুর। চোখ দুটো কুয়াশায় ভেজা ঘাসের মত খনে খনে জল,
বৃষ্টির অপেক্ষায় থাকা কৃষকের মত আকাশে নয় জানালায় চেয়ে দেখি মা উঁকি দিচ্ছেন


মা'র ডানে মেঘ
মা'র বামে মেঘ, উনার চোখে চুলে ভ্রুতে মেঘের আড্ডা, আমার মা মানুষটিই একটি মেঘ ☁।