মহাকাশ জুড়ে ঠাট্টা ইয়ার্কি শুরু হয়েছে মানুষকে নিয়ে
যারা হেরে যাচ্ছে তাদের আর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি টানছেনা।
তারা ছিটকে যাচ্ছে, সময় থেকে ঘড়ি থেকে এমনকি জীবন থেকে।
মিডিয়া বলছে এটা সুইসাইড।
তবে শ্রীভৃগু বলেছেন এটা গ্রহের খেলা। রাহু কিংবা কেতু, আবার দুটোই হতে পারে।
একটা আংটি পরলেই হয়,কেল্লাফতে।
*
ঘোষপাড়ার অলকেশ বাবু ঘুষের টাকা নিয়ে ধরা পড়েছেন তাকে আর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি টানছেনা।
গড়িয়াহাটের মুখার্জিবাবুর স্ত্রী পালিয়েছেন বন্ধুর সাথে, তাকেও নাকি মাধ্যাকর্ষণ শক্তি টানছেনা।
উচ্চমাধ্যমিকে ইংরেজিতে ফেল করা মালদার সুমন, তাকে মাধ্যাকর্ষণ টানছেনা।
একশো আটটা ইন্টারভিউ দেওয়া বর্ধমানের অভিজিৎ কর্মকার, তাকেও মাধ্যাকর্ষণ শক্তি টানছেনা।
তিন মাস ছেলে দেখা করতে আসেনি,বৃদ্ধাশ্রমে পড়ে থাকা বেহালার শর্মিষ্ঠা রায়কে মাধ্যাকর্ষণ টানছেনা।
ই.এম.আই দিতে দিতে ক্লান্ত সল্টলেকের অনুরাগ চ্যাটার্জিকে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি টানছেনা।
চারবছর ধরে ক্যানসার আক্রান্ত বিদিশা গুপ্তকে মাধ্যাকর্ষণ টানছেনা।
সাত বছর ধরে চেষ্টা করে একটা ব্যান্ড দাঁড় করাতে না পারা আবীর সেনগুপ্তকে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি টানছেনা।
মেদিনীপুর থেকে এসে সিঁথির মোড়ে রিক্সা চালানো পল্টু মণ্ডলকে মাধ্যাকর্ষণ টানছেনা।
পার্কস্ট্রিটে রাত এগারোটার পর দাঁড়িয়ে থাকা মিতালি বসুকে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আর টানছেনা।
*
তবে ব্যতিক্রম ঘটছে, অনেক ঘটছে।
ভবানীপুরের মিত্তিরবাবু এককালের মন্ত্রী রায় বাবু অভিনেতা পালবাবু এদের সাথে মাধ্যাকর্ষণেরও সেটিং আছে শোনা যায়।
এরা কেউ ছিটকে যায়না।
*
হাজারবার ব্যর্থ হয়ে সিলিং ফ্যানে ঝুলতে চাওয়া কিছু মানুষ খাটের উপর চেয়ার রেখেও নেমে আসে। কেন? তাদের কী মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এখনও টানে?
জানা নেই, কোনো অজানা কারনে তারা এখনও স্বপ্ন দ্যাখে, মাধ্যাকর্ষণ শক্তির স্বপ্ন।
*
ছোটোবেলায় দাদার জ্যামিতিবক্স নিয়ে স্কুলে যেতাম।
আর প্রায়ই আমি কম্পাস হারিয়ে ফেলতাম।
এখন ভয় হয় আমিও যদি ছিটকে যাই, আমাকেও যদি একদিন মাধ্যাকর্ষণ শক্তি না টানে।
যদি ছিটকে যাই অনেক দূরে, অনেকটা দূরে।
বাড়ি ফিরবো কেমন করে?
আমি যে সব কম্পাস হারিয়ে ফেলেছি রে শ্রী......।।