নিদালি গাঁয়ের কথকতা / অনিরুদ্ধ আলম


(স্বপ্নশিকারি জাদুকর জুয়েল আইচকে)


আকাশের অঞ্চলে তুমি মুঠিখানা মেলতেই
দুটো শাদা পায়রা নিমেষে উড়ে গেল
পায়রার পাখসাটে সেই  
নৈশব্দরা উত্তাল ডানা পেল।
কবোষ্ণ কথকতা ছড়াল পাহাড়ে
নিদারুণ এলোমেলো
বর্ণিল নিকুঞ্জ ঝোপঝাড় পাতার বাহারে।  


বাতাসের বাতায়নে তুমি মুঠিখানা মেলতেই
কবিতার মতো রাঙা প্রজাপতি ফিনকি দিয়ে হারাল দূরে
নিমেষে নাড়িয়ে দিল সেই
নিশ্চুপ অধীরতা। অধীরতা জেগে ওঠে অলসতা ফুঁড়ে।
ফুরফুরে কাশের কাননে
ঘোর ঘন থোকা রোদ্দুরে  
ডাকাবুকো বকুলের ঘ্রাণগুলো উছলায় বনের আননে।


ঘাসদের করিডোরে তুমি মুঠিখানা মেলতেই
উদ্গ্র ফড়িঙ লাফ দিল কুঁজো হিজলের ডালে
ছড়িয়ে গড়িয়ে দিল জল-জোছনার মতো জীবনের উচ্ছ্বাস সেই
মাঠমহলের আলে-আলে।  
ফুলদের গুঞ্জনে একটানা মেতে ওঠে পাড়াগাঁ
ডালিম শিরিষ ডুমুরের আবডালে
বসন্ত নেমে এল আকাশের সামিয়ানা বেয়ে। রঙে-রঙে উচাটন যেন সারা গাঁ।  


জাদুকর, তুমি যদি চলে যাও আমাদের এই পাড়া ছেড়ে
কে শোনাবে কবিদের মতো করে বাঁশির শোলক
কে দেখাবে জলছবি-সুন্দর রোদের চমক    
আদর সোহাগে খুব পাখিদের রাঙা ঠোঁট দেবে নেড়েচেড়ে
ধুলোর চাদর মুছে দিয়ে ঠিক মেলে দেবে হরিত ঝলক?
থেকো
ডোল দিঘিটার পাশে। নাম ধরে ফুল লতা পাতাদের ডেকো
মুছে দিও অসহ্য মলিনতা। লাবণ্য এনে দিও মুঠির ম্যাজিকে
কালো মুছে আলো দিও কুয়াশার শারশিতে নিদালি গাঁয়ের চারদিকে।
কোনো দিন ভুলব না তোমার এ পয়মন্ত খণ
থেকে যাব আজীবন অনায়াসে এমন অমোঘ শত ঋণে অন্তরিন।