এসো আমরা সকলে মিলে সকাল হয়ে যাই / অনিরুদ্ধ আলম


হামেশা কেন
এবেলা যেন
অকাল হয়ে যাই?
এসো আমরা সকলে মিলে সকাল হয়ে যাই।


শাদা কাশের বাতাসি মেয়ে
বাতাসে নেয়ে
এলানো চুল ছড়িয়ে দিয়ে বলে –
আমোদী নদী
পাড়া অবধি
গড়িয়ে গিয়ে বলে –
আমরা আছি তোমাদের এ দলে
সকাল হব সকলে দলেবলে।


ভীষণ ভুলো
পেয়ারাপেঁপে গাছের গুঁড়ো পিঁপড়েগুলো
শিশিরেভেজা বাতাবি লেবু। লেবুর ফুল
শেফালি। জবা। জুঁই। বকুল
বাহারি পোকা
পাহাড়ি লতা কয়েক থোকা
কৌতূহলে আগবাড়িয়ে বলে –
খুব তো আছি তোমাদের এ দলে
সকাল হব চলো-না দলেবলে।

অজানা সুরে কেবলই করে যে ডাকাডাকি
মায়াবি আঁখি আঁকানো ছোটো ছাতারে পাখি
কাকের কালো
বেণীবিলের আকাশি রঙা বাঁকের আলো
পাথারে ঘুরে হারিয়ে গিয়ে বলে –
আমরাও তো ধুলো খেলার ছলে
সকাল হব সকলে দলেবলে।


আদুরে বাড়ি
বুনো বাতাসে তাড়ানো শাড়ি
পাগারপাড় মাড়ানো শাড়ি
উঠোনে ক’টা
ছায়ার ছটা
গোছানো ন’টা
বটের জটা
মিঠে আবেগে ঝলকে উঠে বলে
চলকে উঠে বলে –
সকাল হব ব’লে
মোটেও নেই কোনো হট্টগোলে
এই তো আছি তোমাদের এ দলে
সকাল হব আমরা দলেবলে।
  
তিস্তাপাড়ে
ঝোপে ও ঝাড়ে
এক দিস্তা বিছানো পাতা
আকাশে ভাসে মেঘ কি ওটা?
জিলেপি-আঁকা একটা যেন তুলোর ফোঁটা
বৃষ্টিভেজা হাওয়ার কাঁথা
মেঠো চাতালে ঘাসের কারুকাজ
আড়মোড়াটা ভেঙেই তড়িঘড়ি
বলল হেসে আজ –
আমরা তবে কেন বা বাদ পড়ি
চটজলদি চলে এসেছি
কাশিকুড়ার স্বর্ণালি সে খড়কুটোকে ব’লে এসেছি
বর্ণালি এ সাজানো অঞ্চলে
সকাল হব সকলে দলেবলে।


আমরা যদি সকাল হই, তবে
অই সুজ্যি রোজ
ক’রে রঙের প্রজাপতির খোঁজ
এখানে এসে রোদমেলাতে মাতবে উৎসবে
এবং আরও নিবিড় ক’রে সে আমাদেরই হবে।