হেমন্তের এই সব দিনে-
ধান কাটার ফাঁকে ফাঁকে,
যেখানে পানি থাকতো স্যাঁত-স্যাঁতে-
সেখানে কিছু মাছ পাওয়া যেতো অনায়াসে,
ধান ও মাছ দুটোই আসতো এক সাথে।


মাছ ধরার উৎসব হতো ঘটা করে-
শিংগায় ফুক দিয়ে কয়েক গ্রামের লোক হতো এক সাথে
বাহারি রকমের পলো জাল হেংগা দারকি বর্শা নিয়ে
ভাওয়াইয়া ভাটিয়ালি জারি সারি গান ধরে
এক হাওড় থেকে আর এক ঝিলে;
বোয়াল সোল কালবাউস গজার রুই কাতল পুটি
মৃগেল মূছা পাবদা টেংরা গোলসা ভেদা বাতাসি
বাইম খলসা ধুতরি চিরাতি  প্রভৃতি মাছে
খাঁচা ব্যাগ খলাই যেতো ভরে,
বড় মাছ গুলো শাঁই করে নিতো কাঁধে।


সাপ বেঙ কুচা কাকরা শামুক ও জুটতো মাঝে-মাঝে
জোক চিনা জোক ধরলে পায়ে হাতে
অন্তত কিছু রক্ত চুষে ছারতো তবে।


পুরস্কার আসতো সাথে সাথে-
যার হাত কাঁধ বোঝাই হতো মাছে;
সাইকেল টিভি রেডিও ছাতা টর্চ লাইট ক্রমান্বয়ে।


কখনো পাড়ার সবাই মিলে পুকুরে-
মৃদু মৃদু শীত, শীতের প্রাম্ভে;
কচুরি পানা সরিয়ে সরিয়ে হেংগাজালিতে
পাওয়া যেতো কৈ শিং মাগুর পোঁয়া এক সাথে।


বাড়ির পিছনে আব্বাস ভাইয়ের পাগারে-
টাকি চেং মাছ পাওয়া যেতো সব সময়ে
খুব সহজেই পাওয়া যেতো গর্তের ভিতরে।
একদিন ঠিক সন্ধার আগে আগে
হাত ঢুকিয়েছি একটা গর্তের ভিতরে-
ভেবেছি, বড় চেংটা ধরা পড়েছে,
বের করে দেখি হাত সাপের মাথাতে!


তারপরেও কি দ্বিধা ছিলো মাছ ধরাতে!
এখনো যেতে ইচ্ছে করে মৎস্য উৎসবে।


৩০/০৭/১৪২০
ভালুকা, ময়মনসিংহ।