পুরুষদের আমি দোষ দেই না;  কেননা আমি নারী।
হস্তিনাপুরের ভরা রাজদরবারে, প্রকাশ্য দিবালোকে-
আমার আভরণ উন্মোচনের প্রচেষ্টা হয়েছিলো।
কেননা আমি নারী।।


গঙ্গাপুত্র দেবব্রত, ভীশ্মপণে আবদ্ধ, মাথা হেঁট করে
শুধু আমার আঁধি,    অনুধাবন করে গিয়েছিলেন-
তিনি মৃত্যুঞ্জয়ী,     কিন্তু বচনাবদ্ধ পিতৃপুরুষের
হস্তিনাপুর রাজসিংহাসনের সুরক্ষায়।
তাঁর কূলপৌত্রবধূর নারীত্বের মান-অপমান রক্ষায়
বচনাবদ্ধ তিনি নন। তাই অস্ত্র গর্জে ওঠেনি তাঁর-
কেননা আমি নারী।


আমার পঞ্চস্বামী, রথি-মাহারথি, দেবতাগণের
ঔরসজাত পুত্রেরা, তাঁদের রজঃশ্বলা পত্নীর
অধিকার হারেন দ্যূতক্রীড়ায়। পঞ্চ দেবতার
পঞ্চশক্তি সেদিন আমার লজ্জা উদ্ধারে আসেনি।
কেননা আমি নারী।


আমার পঞ্চস্বামীর প্রত্যেকেই ছিল মহাপুরুষ
তবু তাঁদের সামর্থের অতীত ছিল আমার অপমান.
আমি আজ ইতিহাসের মহাকাব্যগ্রন্থ বন্দীনি...
হে আধুনিকা ভারতনারীকূল, আমার উদ্ধারে...
আমার ভ্রাতা, আমার বাল্য সখা
দেবকি কুমার, যশোদা নন্দন, কংসাহারী...
কেননা আমি নারী।


হে ভারতকূলনারী, আমি দূর্যোধন, দূ:স্বাশনকে
দোষ দেই না, দূর্যোধনের বুকে ছিলো আমার
কৃত অপমানের তীব্র জ্বালা। জ্যেষ্ঠ পিতা ধৃতরাষ্ট্র
ছিলেন জন্মান্ধ। মহামতি বিদূর- দাসী পুত্র
তাঁর বাক্যবানের উর্দ্ধে ছিল এ ঘটনা-
কেননা আমি নারী।



হে আধুনিকা নারীকূল, তোমাদের একজন মাত্র স্বামী
কেবাল মাত্র পুরুষ তিনি। মহাপুরুষ আমার পঞ্চ
দেবপুত্র স্বামী, শশুরকূল আমার অপমান সহ্য করেছে,
আমার অপমান ধংস করেছে গোটা কুরুকূল
আমার পরম পূজনীয় গঙ্গাপুত্রকে শায়িত করেছে শর্‌শয্যায়।
আমি দ্রৌপদী, তোমরাও আমার মত অপমানের-
বিষপান অভ্যাস করো;
কেননা আমরা নারী।।
                    ----------X-----------