এই মাত্র যে শিশুটি ভূমিষ্ঠ হল-
তখন তার নাড়ি কাটা বাকী ছিল।
মাতৃদুগ্ধের খোঁজে সে তখনই হামাগুড়ি,
পাড়ি দিয়েছিল মাতৃস্তনের দিকে।


পাশবিক অত্যাচারে বিষিয়ে যাওয়া নীল শরীরে-
বিষের ফল্গুধারা শিরা উপশিরা বেয়ে মাতৃস্তনে,
শিশু কি করে জানবে মাতৃদুগ্ধের বিষ...
এতদিন ধরে দলে দলে মুখোশ-মানুষ নেকড়ে-
দু মুঠো বাসী পচা ভাতের বদলে
তার মায়ের জমিতে বপন করেছিল তার চারা।
আজ বিষ বৃক্ষে ফল ধরেছে,
শিশু ভূমিষ্ঠ হয়েছে।
তখনও তার নাড়ি কাটা বাকী ছিল।


কাতারে কাতারে চীনে জোঁক ধেয়ে আসে
সদ্য ভূমিষ্ঠের রক্ত, গন্ধ পেয়ে-
আসেনি শুধু সেই সব দলের কোন একটি নেকড়ে
তার পিতৃত্ত্বের দায় ভার নিতে।
আজ কোন ধূর্ত শ্বাপদ আসেনি-
যারা সেদিন মাঘ মাসের শীত বস্ত্রের
মিথ্যা প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে,
বৈশাখে শিশুর মায়ের গাঁয়ের থেকে-
খুলে নিয়েছিল পরিধেয় শেষ সুতো খানি।
এখনও শিশুর নাড়ি কাটা বাকী আছে।


চীনে জোঁকেদের, সবার নজর এখন নাড়ী না কাটা,
শিশুর নাড়ির নিচে।
জোঁকেরা এখন উৎফুল্লিত, মহানন্দিত,
নাভির ইঞ্চি ছয়েক নিচে শিশু বয়ে এনেছে
তাদের সিন্দুক ভরানোর গুপ্তধন।
চুলচেঁরা-কাটাছেঁড়া করে চলছে তার হিসাব নিকাশ।
এখনও শিশুর নাড়ি কাটা বাকী আছে।



নেকড়েদের দালাল কুক্কুরি দাইমা,
সুখবর শোনায় মায়ের কানে কানে-
সুসংবাদের আবেশে প্রসব যন্ত্রনা
অনুভব করেনা মা। মায়ের মন ভরে গেছে,
মনে মনে ভাবছিল, ভাগ্যিস আগেরগুলোর মত...
সুখ না হয়ে এবার হয়েছে সুখী।
নইলে তো সদ্য ভূমিষ্ঠকে, ঠিক আগের বারগুলোর মত;
জোঁকের মুখে গরম নুন দিয়ে মেরে ফেলা হত, অথবা
রীতি মেনে, সুখেদের শরীরকে জ্যান্ত তুলে দেওয়া হত,
গৃদ্ধনি শকুনিদের খুন্নিবৃত্তি নিবারণের জন্য।



কাঁটাঝোপের একটি শুকনো, ঝারাপাতার উপর-
সদ্যভূমিষ্ঠ সেই শিশুর লেখা
প্রথম চিঠিখানি, দমকা হওয়ায় উড়ে এসে জানাল,
মায়ের মত লাশের জীবন বাঁচার ছাড়পত্র পেয়েছে শিশু-
এইমাত্র শিশুর নাড়ি কাটা সম্পন্ন হয়েছে।।
-------------------------------------x-------------------------------