(জাপানের প্রথম নোবেল পুরস্কার বিজয়ী কবি ইয়াসুনারি
কাওয়াবাতার জন্ম শতবর্ষ স্মরণে )


অভিনয় করতে গিয়ে পরিচয়,
শেষে পরিণয় ।
এখন ও আর ষ্টুডিও'তে যায় না ;
বিয়ের পর চিত্র জগতের যেমন আর আট-দশটা
মেয়ের  হয়-
সংসার করে ।
আমি সীমিত কয়েকটা কাজ  নিই ;
কাজের শেষে ঘরে এসে
মেলে একটা খাঁটি জীবনের ছোঁয়া ।


সে বারের একটা ঘটনা-
শহরের একটা সান্ধ্য আসরে
           আমাদের সপরিবার নেমন্তন্ন ;
৭০'এর দশকের সস্ত্রীক অভিনীত কোন চিত্রাংশের
অভিনয়ও করতে হবে- ফরমাশ এলো ।
ঊর্মিলা (আমার মেয়ে) সোল্লাসে
বের করলো বেতালের ড্রেস,
মহড়ার জন্য, বাক্স থেকে সযত্নে ।
আগে তা, সে অনেক পরেছে বটে,
                   এবার পরাবে মা'কে ;
মুখে সংলাপ আওড়াতে থাকে- আর ছোটে ।
মা'র শরীর ছিলো অসুস্থ- বারণ করলাম তাই,
'' নিজে ঠিক হও- কোথায় কিসের কী !''
শেষে মেয়ের আগ্রহ সব দিলো পাল্টিয়ে-
মা পরলো সেই সাজ ।
আরক্ত ঝিলমিল চোখ আর পাণ্ডুর মুখ হতে
নামে যেন এক অসহায় জীবনের ছায়া ।
তাই  দেখে মেয়ে হাসে আর হাসে-
থামে শেষে, আমার মৃদু ভৎর্সনাতে  ।
আমার বুকে তখনই কিন্তু বেজে ওঠে
                                 পরকালের বীণ ;
ষোলটি বছর একই ছকে বাঁধা যার,
            এমনতর হয় নি কোন দিন
কী করে আজ মনে হ'ল, সবই অলীক-
                          মিথ্যে প্রিয়ার হাসি
আর্ট বিষয়টাও অসার লাগে-
                   যাকে অধিক ভালোবাসি।
হাজার প্রশ্ন মাঝে, কেমন যেন লাগে-
                     আজ উনিশ বছর পরে
নয়নার কথা বলে যেতে পারবো কি তেমন করে ?
কী জানি, সে-ই বেতাল হয়ে আসে যদি,
আমার ন-অভিনীত জীবন পথে
              দাঁড়ায় এসে পথটি ঘিরে ।


তারপর,
আমার পালা- মেয়ে চাপ দিতে থাকে ।
আমি সব-কিছু ছেড়ে, 'ফ্যাক্স করবো' বলে,
লিখি- নেমন্তন্নে যাব একা ।


শেষে,
তাও ছিঁড়ে ফেলি ডাস্টবিন'এ ।


(রচনাকালঃ ২০০০ ।)