হে ঈশ্বর, এ কি তব বিচার
গরিবের রক্তে ধরণী স্নাত বার বার!
তাই আজ কাব্য নয়,
গদ্যময়ে ভরিয়ে তুলি।
ছাড়ি ফুল বেলপাতা,
অর্জুনের গাণ্ডীব ধরি।
দানবের রক্ত-স্রোতে করি স্নান,
ধরণীর ক্লেশ অবসান---
ভদ্রাকালির খড়্গহাতে অত্যাচারীর ছিনিব প্রাণ।


দুর্বাশার অভিশাপে ধ্বংসলীলার মাতন বাজে
উড়াইব বিজয় ধ্বজা পরশুরামের পরশু হাতে
হইব শ্মশানমুখী--
যজ্ঞের সাগ্নিকে জ্বালিব বিশ্বময়।
সাজি রণ তরী,
উচ্চঃশ্রেবায় বসি আমি দুর্জয়।


জ্বালামুখীর দাবানলে,  ধ্রুমজালে মেদিনী ভরি
মুরলীর বংশী ত্যাজি, সুদর্শন চক্রধরি।
দুঃশাসনের রক্তপান
এ আমার অটল পণ---
শতবার করিব এবার মর্ত্যের রাবন নিঃধন।


ত্রিদেবের নেত্র তেজে,ভূ-লোক করি শ্মশান।
তাণ্ডবের নৃত্য নাচি,দুর্যোধনে করি নাশ
চণ্ডিকার পদাঘাতে, পিষে মারি পিশাচ।
অগ্নিবীণার ঝঙ্কারে পিনাকের টঙ্কারে
পাপীরে করি শঙ্কিত
নিস্তার নাই, নিস্তার নাই, নিস্তার নাই কারো ------
যে করিছে গরিবরে বঞ্চিত।


ভৈরব বেশে দুরাচারীর দেশে ছুটাইব মম অশ্বরথ,
দধিচীর বজ্র হানি, রক্তবীজের রক্তে রাঙাই আমার পথ।
সহস্র মুন্ডে সাজি
আমি যে চণ্ডী-কালী
জয়ের কেতন উউড়াইয়া পথে পথে
সংহারি সকলি।

মানব পশুর লহুর তৃষায় বক্ষঃজ্বালা,
বিদীর্ণ করি পিঞ্জর
পাষণ্ডের দেহ করি ফালা ফালা।
আমি ‘বিদ্রোহী’ কবি নজরুল
দেশ দেশান্তরে ঘুরি,
দানবরে বধিবার ----
এক হাতে অসি মোর,
অন্য হাতে ত্রিশূল
পাতকের বংশ করিব নির্মূল
আমার এ অঙ্গীকার---


আমার এ রণ হইবে না কভু শান্ত
অসীম শক্তিধারী আমি না হই রণক্লান্ত।
লয়ের সন্ধানে বিলয় আনি প্রলয়ের তালে তালে,
নব সৃজনতায় সাজাই আবার নব বিশ্ব তলে।