তুমি আসবে কি? মাঠ-ঘাটে?
ধানের ক্ষেতে?
যেখানে তোমার নরম হাতে রুয়েছিলে১ কচি ধানের চারা
আজ তারা বড় হয়ে গেছে।
ঝিরি-ঝিরি বাতাসে দুলছে সবুজ পাতাগুলো
সারামাঠ জুড়ে হাসির হিল্লোল - এক অনবদ্য উচ্ছাসে।
উল্লাস জেগেছে কৃষকের মনে – এক অভূতপূর্ব আনন্দে।


তুমি আসবে কি? কাক-ভোরে?
শিউলি তলাতে?
যেখানে তোমার কোমল পা-দুটো মাড়িয়েছিল শিশির ভেজা ঘাস।
আর তুমি  ভরে নিয়েছিলে আঁচল ---
ঝরে থাকা শিউলি ফুলে। গেঁথেছিলে
এক ছড়া মালা । জানিনা কাকে পরাবে বলে?
তোমার মুখের হাসি বলে দিয়েছিল – সে তোমারি হবে।


তুমি আসবে কি? ফিরে?
নাটরের বুকে?
যেখানে দুদন্ড শান্তি দিয়েছিলে হাজার বছরের পথচলা জীবনানন্দে।
তোমার ছোঁয়ায় ভরেছিল প্রাণ ছন্দে।
প্রশান্তির অতল-গহন ছুঁয়েছিল তোমার ভালবাসায়।
তুমিই নিয়ে গিয়েছিলে ধানসিঁড়ির বুকে - গাংচিলের বেশে
এক অনির্বচনীয় অনুভূতি জেগেছিল তার দেহে-তোমার কেশে।


তুমি আসবে কি? পড়ন্ত বেলাতে?
ইছামতীর পাড়ে?
যেখানে বাঁধনহারা পাখিরা উড়ে যায়, সীমাহীন নীল দিগন্তে---
কাশফুলের শুভ্রতা জাগে নদীধারে, শরত্কালে।
জেলের জাল ভরে রুপালী মাছে।
সাতরঙা রামধনু আঁকে আপন ছবি সুনির্মল জলে।
মন মাতানো ভাটিয়ালী গান শুনি আপন মনে।


তুমি আসবে কি? কাছে?
বুকের ভিতরে?
যেখানে অনেক ব্যথা জমে আছে- কাঁপছে পাষণ ভারে।
দাওনা তারে ছুড়ে ফেলে বহুদূরে---
ক্লান্তির হউক অবসান তোমার পরশনে,
জাগায়ে তোলো কম্পন তোমার আলুথালু দেহের ভালবাসায়,
রোমে রোমে শিরায় শিরায় আমি যেন অনুভবী তোমায়।


শব্দার্থ ১: রুয়েছিল- রোপণ করেছিল