# নীরব ভাষা # / (অনুরাধা চক্রবর্ত্তী।)


একদিন, একদিন সবাইকে ছেড়ে চলে যাব আমি
সেদিন আমার এই সোশ্যাল মিডিয়ার একাউন্ট গুলো এমনি রইবে;কোন স্ট্যাটাস চেঞ্জ হবে না।
রোজকার এত শত অনুষ্ঠানের ছবি কেউ পোস্ট করবে না।বন্ধুরা হয়তো খুঁজবে আমায় মেসেঞ্জারে
কেউ বলবে কিরে? কেমন আছিস কোন পাত্তাই নেই তোর, আবার কেউ বলবে শুভ সকাল দিনটি খুব ভালো যাক আপনার।যারা আরেকটু নিকটের
তারা হয়তো হোয়াটসঅ্যাপ কল করবে কিংবা ফোন কল।এক দিদি বলবে, কীরে মনা!ফোন ধরিস না কেন?
আর এক্  দিদি বলবে কি ব্যাপার ম্যাডাম খবর কি?
আরো কাছের এক দিদি, হোয়াটসঅ্যাপে লিখবে, বাবা এত ব্যস্ত হয়ে গেলি একটা উত্তরও নেই।
আস্তে আস্তে দিন যাবে মাস যাবে বছর যেতে হয় তো একটু বাকি তখন সোশ্যাল মিডিয়ার অন্য কোন বন্ধু সত্যিটা জানবে, জানবে আমি হারিয়ে গেছি অনেক দূরে। যেখানে গেলে আর ফেরা যায় না। এবার আমি সবার কাছে খুবই প্রয়োজনীয় আর খুবই আকর্ষণীয় হয়ে উঠবো; এটাই জগতের নিয়ম তো। বেঁচে থাকার মত মহাপাপ এই পৃথিবীতে আর কিছু নেই। হাজার দ্বন্দ্ব,হিংসার চোখ,হাজার কুৎসা, শত্রুতা প্রতিযোগিতা সব তখন উবে যাবে। আমার সৌন্দর্য আমার অন্যান্য গুন, এসবই তখন প্রতিদিন চর্চা হতে থাকবে।
কেউ বলবে খুব ভালো ব্যবহার ছিল, কেউ বলবে রাগ করলেও রাগ বেশিক্ষণ মনে পুষে রাখতে পারত না। কেউ বলবে চোখ দুটো ভীষণ সুন্দর ছিল, যেন দীঘির মত। আর আমি আমি তখন ফন্দি খুজবো কিভাবে আবার ফিরে আসা যায় এই পৃথিবীতে, ঠিক তোমাদেরই মাঝে। এসে বলব আমি সেই মেয়ে যাকে তোমরা সারাক্ষণ তোমাদের প্রতিযোগী মনে করেছিলে, যাকে তোমরা সত্যি কারের আপন ভেবে কোনদিন কাছে টেনে নাওনি, আর আজ যখন সেই মেয়েটি নেই তাকে এত প্রশংসা, এত সম্মান? সম্মান পাবার বড্ড বেশি লোভ আমার। আর কিছু তো চাই না। তাই তোমাদের সম্মান আমাকে আবার টেনে আনল তোমাদেরই মাঝে। যখন কেউ বেঁচে থাকে তখনই তাকে মূল্য দিও। তার গুণ তখনই খোঁজার চেষ্টা করো তার দোষ গুলোকে পারলে সরিয়ে রেখো, নয়তো তাকে দোষ হীন করে তুলো। আমি বলেই চলবো হয়তো, কিন্তু আমার সেই কথা,তোমাদের কানে পৌঁছবেনা। কারণ
আমি তখন না ফেরার দেশের মানুষ হয়ে গেছি যে। তবু আমি নীরব হয়ে অনেক ভাষা বলে চলবো।
সেদিন আমার ভাষা হবে নীরব, কলম স্তব্ধ হবে;
সেদিন অনেক, অনেক দূরে হারিয়ে যাবো আমি।