"*তুষারশৃঙ্গ ও আগুননদী*/অনুরাধা চক্রবর্ত্তী।"
রবীন্দ্রনাথ—
তুমি হিমালয়ের এক অলৌকিক শৃঙ্গ,
তুষার ছুঁয়ে বসে আছো সূর্যের মতো একা,
আলো তোমার স্নিগ্ধ—যেন আকাশ নিজে গলে গেছে
তোমার চিন্তায়।
তোমার শব্দে জেগে ওঠে
আকাশী দিগন্ত, জলছায়া, পল্লবের প্রার্থনা—
তুমি নীরবতার মন্দির, শুদ্ধতম ধ্যানের ভিতর
নরম সুরের বিপ্লব।
আর নজরুল—
তুমি সেই হিমালয়ের বক্ষ ফুঁড়ে বেরোনো
এক খরস্রোতা নদী,
তপ্ত লাভার মতো ছুটে চলেছো—
কখনও আগুন, কখনও অশ্রু।
তোমার কণ্ঠে বাজে দমকা হাওয়ার বাঁশি,
তোমার কবিতা এক উন্মাদ লালশিখা,
ভাঙো, জ্বালাও, জাগাও—
তোমার ভাষা আগ্নেয়গিরির কাব্য।
তবুও তোমরা দুজনেই একই বৃন্তের কুসুম—
একজন রাত্রির ধ্যান, অন্যজন বজ্রের শঙ্খ।
একজন গানে স্বর্গ,
অন্যজন কবিতায় বিপ্লবের রূঢ় স্বপ্ন।
আমরা দাঁড়িয়ে আছি তোমাদের ছায়ায়—
তুষারশৃঙ্গের নীচে দাঁড়িয়ে শুনি
নদীর গর্জন, আর ছুঁয়ে দেখি
তোমাদের আলো ও আগুনে গড়া এক বিশ্বচিন্তা।