আমি হাসি—
কিন্তু আয়না জানে আমি মিথ্যে বলি।
ঠোঁটে বাঁকা হাসি, চোখে নীরবতা,
ভেতরে জমে আছে ঝড়ের মেঘ,
আর কেউ কোনোদিন জিজ্ঞেসও করে না— কেন?

বলে, "তুই তো শক্ত, ঠিক হয়ে যাবি,"
জানে না—শক্ত থাকা মানেই কষ্টের অপরাধ।
চামড়ার নিচে লুকোনো যন্ত্রণা,
চুপচাপ রক্তক্ষরণ,
আর একফোঁটা কান্নাও যার অনুমতি পায় না।

রাতে আমি ছাদের দিকে তাকিয়ে কথা বলি,
চোখের জল বয়ে যায়,
সেইসব স্বপ্ন গুলো ভিজিয়ে দেয়—
যা দিনের আলোতে বলার সাহস হয় না।
আমি রপ্ত করেছি "আমি ভালো আছি" বলার অভিনয়,
যখন ভেতরে আমি ধীরে ধীরে মরে যাই।

কতবার এই মুখোশ পরব বলো?
এই আঁকা হাসি, এই নির্মম দায়িত্ব?
হাসব, মাথা নাড়ব, অভিনয় করব—
যখন আমার সবটাই ভেঙে পড়তে চায়,
একটু শান্তির আশায়।

জগৎ চায় হাসি—না-ভাঙা মুখ,
তারা বোঝে না ভাঙা আত্মা।
তাই আমি আমার কান্নাকে আলোয় মুড়ে ফেলি,
দিনভর নাচি, আর রাতভর কাঁদি—
সেই কান্না যা কেউ শোনে না।

তুমি ভাবো সহজ?
এই ভাঙা বিশ্বাসের উপর দাঁড়িয়ে থাকা?
একটা ভুয়া আনন্দ নিয়ে ঘুরে বেড়ানো,
ভিড়ের মাঝে একা হয়ে পড়া—
আর গিলতে থাকা সেই কান্না যা কারও নজরে আসে না?

কিন্তু মুখোশও তো একদিন ছিঁড়ে যায়,
আলোও একদিন পথ হারায়।
আর যেদিন ভেঙে পড়ব আমি,
সেদিন কেউ যদি শোনে—
আমার চুপ করে রাখা কষ্টের আওয়াজ…

ততদিন পরব এই মুখোশ,
চলব শান্ত মুখে এই শূন্য রাস্তায়—
শক্তির জন্য নয়, পড়ে যাওয়ার ভয়ে,
গর্বের জন্য নয়, কেবল অভ্যাসে—
একটা হাসি… যা কেবল দুঃখ ঢাকে।

( কারণ সবচেয়ে উজ্জ্বল হাসির আড়ালে লুকিয়ে থাকে সবচেয়ে গভীর বেদনা। )