কবি কখনও আশ্রিত হয় না…
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ উদয়াস্ত কালান্তিক অপারগ হয়ে
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ তার পরে’ও ‘কবি আশ্রমের’ মত
একটি অবাধ্য স্বপ্নের
নাছোড় প্রতিভূ হয়েছি আমি
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ যার সুচারু বুননশিল্পী হবে
এই বাংলার শতরূপা প্রাণময় সত্ত্বা প্রমুখ…

সমাজের বাঁকা চোখের চাউনিতে
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ বেকার কিংবা রাধুনী খেতাবের আড়ালে
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ব্যথিত হবে না যে সৃষ্টি স্বপ্নভঙ্গে
করুণ চোখে ঝ’রবে না আর
এক ফোঁটা উষ্ণ উপেক্ষিত অশ্রুজল…

ক্ষুৎপিপাসিত হতাশ জঠরে
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ একুশ বয়সের নির্জলা বাস্তবতায়
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ আর কোনো সুকান্ত লিখবে না
“কবিতা তোমায় আজ দিলাম ছুটি
ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়”…

যুদ্ধোত্তর শশ্মান কয়লা’র ভাগাড়ে
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ কি ক’রে একবার নিজের পায়ে হাঁটা যায়
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ এই শঙ্কায়, অতি আত্মধিক্কারে নতজানু
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ আবুল হাসান আর লিখবে না
“ঝিনুক নীরবে সয়ে যাও
ভিতরে বিষের বালি, মুখ বুজে মুক্তা ফলাও”

আর হারিয়ে যাবে না
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ আমাদের মাহমুদা সিদ্দিকা
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ সংসারের একপেশে উত্তাল বন্যায়
রাক্ষসী সংসার আর কতকাল
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ শুধু রমনীর গুণেই সুখের হবে…!
যখন উপেক্ষিতার তক্‌মা এটে আছে গায়ে…

সুনীল সাইফুল্লাহ’দের আর
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ অশান্ত দূর্লঙ্ঘ অভিমানে
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ কোনোভাবে যেন বলতে না হয়
“আমি কেন আত্মহত্যা করলাম
তার কোনো জবাব আমি দেবো না”

আশরাফ আলী খান’দের যেন
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ আর ডাক মাশুলের অভাবে
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ মা’কে পাঠাতে চাওয়া চিঠি’ও
ছিড়ে ফেলতে না হয়…!

আর যেন কোনো ‘চন্দ্রাবতী’
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ জয়ানন্দের অনুগামী না হয়
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ চন্দ্রাবতী যেন চন্দ্রপ্রদীপ
হয়ে আলো ছড়াতে পারে
এই বাংলার অন্ধকার ক্ষুধিত কুটিরে…

যেভাবে যে অতিবাস্তবতায় প্রকৃতিকে দেখলে
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ অলীক মোহিনী প্রিয়তমের চোখ
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ পাখির নীড়ের মত প্রশান্তির মনে হয়
তেমনি কোনো স্বপ্নের দূরারোগ্য স্খলণে
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ অভাবের নাতিদীর্ঘ জীবন নিয়ে
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ আর কোনো জীবনানন্দ ট্রামের নিচে
দেবে না অসমাপ্ত ধানসিড়ির জীবনাঞ্জলি…
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​[ ক্রমশঃ প্রকাশ্য ]

উত্তরীয়ঃ
এটি একটি অসূচিত স্বতোৎসারিত আত্মপ্রস্তাবনা… এই করুণ কবি’র মিছিলে আরো অনেক অনেক নাম প্রযুক্ত হতে থাকবে নিজ নিজ জীবনযন্ত্রণার অনুচিত্র সহকারে… “সৃষ্টি বিলাস” নামের এমন একটি কবি আশ্রমের স্বপ্ন যে কোনোদিনও পূর্ণ হবে এ নিশ্চয়তা কেউ দিবে কিনা আমার জানা নেই তবে “চক্ষে আমার তৃষ্ণা, তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে”… যে করুণ প্রানপ্রতিম তাঁর হৃদয়ক্ষরিত শেষ রুধির বিন্দু দিয়ে হ’লেও কথার ফুলের বসন্ত আনতে চায় কবিতার শুধু দুটি চরণ রচনা ক’রে, সে যদি আঘাত পায়, উপেক্ষিত হয়, শোষিত হয় তবে কিভাবে মনন উদ্যানে পরাগায়ন হ’তে পারে…! সুতরাং আমার এই নাছোড় অবাধ্য স্বপ্ন দেখা… কবি, তুমি একা নও, তোমার সাথে এই দারুন পৃথিবীর পড়ন্ত বিকেলে সাগর সৈকতের ভেজা বালিহাঁস রয়েছে… আর রয়েছে এক চোখ অতলান্তিক সমুদ্র চরাচর…!
_____________________________________________
দ্রষ্টব্যঃ কপিরাইটের জন্য এখানে প্রকাশিত প্রতিটি সাহিত্যকর্মই আংশিক আকারে প্রদর্শিত
N.B.: Some stanzas here have been masked to avoid copyright infringement
[ Copyright © 2023 | Anwar Parvez Nur Shishir – All Rights Strictly Reserved ]