ষোরসী যুবতী কন্যা জল আনিতে ঘাটে
জমিদার তখন নৌভ্রমনে পরীসদ সনে।
জমিদার নজর তুলিয়া কহিলেন
উজির সাহেব,একটু আসেন দেখী একা
এমন সুন্দর মুখ আগেতো হয়নি কখনো দেখা।
বয়স হলো ৮০ ঘরে
সাধ হয়নী পূরন
আজই প্রস্তাব পাঠান
জমিদার বংশে আজই হোক বধূ বরন।
কি বললে আপনি?
উজির: মহারাজ
আপনি রাজার রাজ
আপনারে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার এমন
কে করিবে আপনার প্রস্তাব বারন।
পরেরদিনই উজির সাহেব আশিলো পাইক পেয়াদা সনে
কন্যার বাবা অবাক হইয়া কি করিতে কি করিবে ভাবিতে না পারে;শুধাইলো জনে জনে।
উজির সাহেব বলিলো মশাই
তোমার কন্যার ভাগ্যের মতো এতো বঠ ভাগ্য আর দেখি নাই।
মহারাজের নজরে পরিছে
আগামি সপ্তায় বিবাহ হইবে
মহারাজ ধয্য না রাখিতে পারিতেছে।
কন্যার বাপে শুনিয়া কহিলো
এতো বড় ভাগ্য আমার
আমার কন্য রাজ বধূ হবে
কি চাই বলো আর!
পরের সপ্তায় বিবাহ হইলো
বৃদ্ধা জমিদার সাতপাকে বাধিঁলো
কন্যার মনে প্রশ্ন আসিলো একবার।
ফুলসজ্জার রাতে বৃদ্ধা জমিদারের খুশি
বধূর মুখ চাহিয়া মহারাজ ২৫ শে
বয়স যদিও তার তখন ৮০.
আদর করিতে গিয়া এমন চাঁদের সনে
বৃদ্ধা জমিদার পটল তুলিলো
জমদূত দেখিলো এক্ষণে।
বিধবা হইলো ষোরসী কন্যা ফুলসজ্জার রাতে।
জমিদারি রক্ষার্থে সওয়ারী আসিলো ততক্ষনে।
খনর পাঠাইলো কন্যার বাপেরে
আজই আসেন জমিদার বাড়ী।
সতি দহে পবিত্র হবে সমস্ত জমিদারি।
কন্যার বাবা আসিয়া কহিলো মা
সতি দহে গা দিয়া তোর,তুই স্বর্গে চলে যা।
১৪ পুরুষ পূর্ণে হবে
স্বর্গ পাবে সবাই
এটাই বিধির লিখন ছিলো
ভগবানের দোহাই।
স্ত্রীর দেহ পুরুষের জন্য
এটাই হয় সৃষ্টিতে মান্য
তুই না বলিস নে মা।
সতি দহে গা দিয়া তুই স্বর্গে চলে যা।
কন্যা কিছু বলিলো না
কেবল নীরবে মাথা দিলো সারা
চন্ডাল দল খবর দিতে উজির দল ছিলো ততোক্ষণে দাড়া।
রাম নাম চারদিকে পরিলো সারা।
চিতা করিতে নদীতীরে জ্বালানীতে দেয়া হলো আগুন
সতির তখন হাত পায়ে বাধন পরিছে দ্বিগুণ।
চিতায় তুলিতে চন্ডাল দল আবাক হলো দেখে।এমন রুপসী কন্যা কয় পুরুষে জোটে!
মুহূর্তেই চন্ডাল গোলো ধর্মের বাইরে
তরুন চন্ডাল ব্রাম্মন হয়েছিলো গতো আষাঢ়ে।
ভাবিল,এমল কন্যা,একে যাবেনা পোড়া
যেমন করেই হোক একে রাখবো মোরা।
চিতার আগুন গাঢ় হইলো
জমিদারের উজির পেয়াদা সামনে রইলো।
সতি দহে প্রস্তুতি সব হলো সারা।
তরুন চন্ডাল প্রার্থনা জুরিলো মন মন্দিরে
ভগবান দেও সারা।
এতোক্ষণে ভগবান বুঝি প্রসন্ন হইলো
লক্ষন গেলো দেখা
চিতায় তুলিতে সতি আসিলো ঝর বন্যা।
চোখে পরিলো ছাই
ভাবিলো সবাই সতি জলিছে
আগুন দেখীলো সবাই।
কন্যার পিতা তখনো ছিলো নিশ্চুপ
কন্যা তখন ভাংয়ের নেশায় আধমরা।
উজির সহ জমিদার লোক ঝর বাতাসে হইলো চিতা ছাড়া।
কে কোথায় দৌড়ে পালালো
কেউ দেখিলোনা করে,পলায়ন ছাড়া।
এতোক্ষণে বাতাসে আগুন দ্বিগুণ হতে তিনগুণ জলিলো চন্দ্রন কাঠের সারে।
তরুন চন্ডাল লুকায়ে তারে স্থান ত্যাগ করিলো এবারে।
ঝর হাওয়া কালো মেঘ চমকে বৃষ্টিতে রুপ নিলো
ভোর বেলায় বৃষ্টি শেষে জমিদার ওয়ারীস আসিলো
তালাসি নিতে চণ্ডাল দল সনে।
বলিলো কও চন্ডাল সতির দহ হয়েছে কোন ক্ষণে?
গুরু চন্ডাল কহিলো,হুজুর বৃষ্টি আসিবার পূর্বে।
আগুন ছিলো বেগবান
বাতাস বহিছিলো ভগবানের কৃপার সনে।
খুশিতে সবাই রামনাম জপিলো
পবিত্র হয়েছে সব
তা না হলে কি করিতো ভগবান এতো বড় পাপ মাপ?
তরুন চন্ডাল পলায়ন করিছে, যুবতি সতি কন্যা সনে
এ গ্রাম ছাড়ি ও গ্রাম পারি আসিলো কুটিরে এক বনে।
যুবতি কন্য তখনো অচেতন ভাংয়ে।
পরের দিন সকালে ঘুম ভাঙ্গিলো
পরনে তার রঙ্গিন শারি দেখিলো
চমকে গিয়ে কান্না জুরিলো
তরুন চন্ডাল বলিলো-
ভয়নাই কন্যা আমি জমদূত নহে।  
যুবতি কন্যা কহিলো
চন্ডাল,এ তুমি কি করেছেন?
আমায় ক্ষ্যামা করবেনা ভগবান।
তরুন চন্ডাল কহিলো
আমি মানিনা
আমি ভগবান,ধর্ম কিছু জানিনা।
এমন সতির দহ হয়না
আমি পারিনা
কন্যা:ধর্ম গেলো,ভগবান গেলো,স্বামী গেলো,সমাজ গেলো
দেহো গেলে আর কি আসে যায়?
কোন কাজে আসবে আর এসব?
তরুন চন্ডাল:ভগবানতো মানো কন্যা তুমি
মানোতো তারে মনে
এই দেহ খানিতেই ভগবানের বাস
তারে পাবানা আর অন্য খানে।
আমারে যদি বিশ্বাস করো কন্যা
সত্য মানো গায়ের রঙ্গিন শাড়ী।
আজ দিনটা বিশ্রামের
সন্ধা বেলায় জেলে নৌকায় দড়িয়া দেবো পাড়ি।
ওপারে গেলেই মুক্তি কন্যা
যাবে আমার সনে?
সত্য করে কও কন্যা যা আছে তোমার মনে।
কন্যা:দেহে যদি হয় ভগবান
প্রাণ যদি হয় দ্বান তার।
আমার দুয়ের মালিক আপনি
আপনি হলেন আমার পরমঈশ্বর।