ছোট বেলায় গল্প শুনেছিলাম-
মানুষ মরলে আকাশের তারা হয়ে যায়;
আমি এখন অন্ধকার রাতে আকাশের দিকে তাকাই
আর ভাবি আকাশের ঠিক কোন তারাটা তুমি-
মাগো খুব ইচ্ছে করে দেখতে তোমায়,
আমি ছিলাম তোমার নয়নের মধ্যমণি
তুমি ছিলে আমার দু’চোখের তারায়।


সেদিনই আমার সম্মান শেষ বর্ষের শেষ পরীক্ষা
হল থেকে বের হয়ে মোবাইল খুলতেই, ফোন-
তোমার অবস্থার অবনতি;
হাসপাতাল পরিবর্তন করা হচ্ছে।
বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠে
কে যেন সমানে অসংখ্য হাতুড়ির আঘাতে
বুকের পাজরগুলো ভেঙে দিচ্ছে,
দূর থেকে এ্যাম্বুলেেন্সর সাইরেন কানে
কান্নার সুর হয়ে বাজছে।
পাহাড় সমান জ্যাম ঠেলে বাসায় পৌছে
বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই
এক রাজ্যের ঘুম আমার চোখে ভীড় করে
আমি উঠে দাড়াই কিন্তু পা যে সামনে চলেনা।


হাসপাতালে তুমি তীব্র যন্ত্রনায় ছটফট করছো
অথচ তোমার হাতে হাত রাখতেই
তুমি পরম মমতায় আমার গালে হাত বুলিয়ে দিলে
বরফের মতো ঠান্ডা তোমার হাত
আমার বুক ফেটে যাচ্ছে
দুচোখের ধারা অঝরে ঝরছে
আমি যেন তখনই সেই আগাম বার্তা পেয়ে যাই-
মাগো, এ জীবনে তোমার হাতের উষ্ণ পরশ আর পাবনা।


বহু পরিশ্রমে গড়া, বহু সাধের, বহু স্বপ্নের সংসার
মাগো তোমার নিমিষেই ভেঙে চুরমার।
বল মা, এক জীবনে এক সাথে
এতগুলো স্বপ্নের মৃত্যু হলে
তবে তোমার খোকা কি নিয়ে বাঁচে।