তোমাকে দেখে সহস্র শব্দের ঢেউ আছড়ে পড়লো বুকের ভিতর  
শত চেষ্টা করেও বাগযন্ত্র শ্রাব্যসীমার মধ্যে
কোন শব্দ উচ্চারণ করতে পারলো না;
উচ্চারিত সকল শব্দই- শব্দেতর
অথবা শব্দোত্তর হয়ে গেল।
তোমাকে দেখে স্বরযন্ত্র তার ব্যবহার ভুলে যায়-  
ঠিক কত হার্জের শব্দ বের করলে
কর্ণে শ্রবণযোগ্য কম্পন তুলবে কি জানি কি! খেই হারায়।


অথচ, কথা ছিল তোমাকে দেখে বাতাসের ফিসফিসানিও
মোহন বাঁশির সুরের মতো মোহনীয় সুরে বেজে ওঠার,
কথা ছিল তোমাকে দেখে ফুল ভ্রমরার নীরব কানকথা জল ধারার
সরব স্রোতের মতো পাড়াময় ছড়িয়ে পড়ার,
কথা ছিল তোমাকে দেখে পাখ-পাখালির কূজন নিপুন বাদকের মতো
সুরেলা সুরে উচ্চতর দ্যোতনা তুলার,
কথা ছিল তোমাকে দেখে সমুদ্রের তমুল গর্জন বোধগম্য মধুর
সুললিত স্বরে শ্রুতিযোগ্য হয়ে উঠে আসার,
কথা ছিল তোমাকে দেখে বোবাদের বুকের চাপা কান্না মুখে কথার
খৈ হয়ে সরষে ফুলের মতো ফোটার,
কথা ছিল তোমাকে দেখে ভাষাহীন প্রাণীদের শব্দে শব্দে
তুমুল মাতামাতি করে শব্দের বাজার বসার,
তোমাকে দেখে নির্বাক জিরাফেরও বাগযন্ত্র সচল করে দেয়ার
কথা ছিল বোধগম্য ভাষায় বিকট আনন্দ চিৎকার।


অথচ সময় যে কখন-কাকে-কোথায় হিড়হিড় করে টেনে নেয়
কিন্তু কথাতো কথাই থেকে যায়;
বুকের পাজরে  পাজরে আওয়াজ তুলে নিভৃতে মুখ বুজে-
কুয়োর ভিতরে উচ্চারিত শব্দ যেমন প্রতিধ্বনিত হয়ে পালাবার পথ খুঁজে।
____________
০৩ জুন, ২০২০
শের-ই-বাংলা নগর
আগারগাঁও, ঢাকা-১২০৭।