কম করে হলেও একযুগ তোমায় দেখি না;
এও কি সম্ভব!
বড় অবাক লাগে-
যে তোমাকে এক দন্ড না দেখলে কেমন উতলা হয়ে যেতো।
আমিও পারি বটে- পেরেছিতো!
পারতেই হবে;
কিভাবে পেরেছি- এতোটা বছর!
আমি জানি- শিথানের বালিশ জানে।


এখনো মনে মনে খুব করে চাই-
তোমার সাথে হঠাৎ দেখা হয়ে যাক।
আমি প্রথমে থ খাবো,
তারপর ইতস্তত করবো,
হাত-পা কাঁপতে শুরু করবে,
কথা বলতে গেলে কন্ঠ আড়ষ্টতায় জড়িয়ে যাবে,
হয়তো বুকের চিনচিন ব্যথাটাও আবার শুরু হবে,
দুরুদুরু বুকে হয়তো সামনে দাড়াবো,
আমার সমস্ত শরীর অবশ হয়ে আসবে,
চোখে হয়তো ঝাপসা দেখবো।


নতুবা এসবের কিছুই করবো না শুধু তোমাকে নীরবে অনুসরণ করবো;
এখনো কি তোমার চুলগুলো বাতাসে দোল খায়?
চুলের ঢেউগুলো কি এখনো আছে?
তুমি হেটে গেলে এখনো কি নুপুরের ঝংকার বাতাসকে আন্দোলিত করে?
পেলবতায় ভরা মুখে কি বলিরেখার ভাঁজ পড়েছে?
ভুবন মোহিনী সেই হাসিটা কি এখনো মুখে লেগেই থাকে?
আমি শুধু দেখবো, চুপিচুপি দেখবো- তোমার অলক্ষ্যে; অনেক দূর হেটে যাবো তোমার পিছু পিছু।


পাঁচ আত্মা পড়ে আছে তোমায় দেখবো বলে-
একই শহরে আছি,
একই আকাশের নিচে,
একই চন্দ্র সূর্য তোমার আমার আকাশে আলো বিলায়,
হয়তো কখনো কখনো একই গাছের অক্সিজেন নেই আমরা,
কতদিন হয়তো তপ্ত রোদে পরিশ্রান্ত হয়ে বিশ্রাম নিয়েছি একই উদ্যানে,
কখনো কখনো হয়তো তোমাকে স্পর্শ করা বাতাস আমায় ছুঁয়ে যায়,
হয়তো তোমার পাদুকায় স্পর্শ করা ফুটপাতে আমি হেটে বেড়ায় বহুদূর,
কয়েকদিনের ব্যবধানে হয়তোবা তুমি আমি
একই রিকশা চেপে বসেছি চেনা কোন গন্তব্যে,
হয়তোবা দুদিন আগে তুমি যে রেস্তোরাঁয় খেয়েছো
সেই একই রেস্তোরাঁয় ভোজন শেষে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেছি আমি।


একই সার্বভৌম ভূখণ্ডের একই শহরে আমরা
তবুও দূরত্বের দেওয়াল যেন চীনের মহাপ্রাচীর।
চীনের মহাপ্রাচীর স্পর্শ করা সবার পক্ষে সম্ভব না হলেও অনেকেই তা পারে।
কেউ কেউ তা আবার টপকায়ও অবলীলায়
কিন্তু এই অধম এসবের কিছুই না।


জানি তোমাকে দেখার সকল অধিকারই হারিয়ে ফেলেছি আমি
তবুও উড়নচণ্ডী মন আমার অনধিকার চর্চা করতে বড় ভালোবাসে।
_________
অপু সুলতান
০৫ মে, ২০২০
দক্ষিণ খান, ঢাকা।