প্রিয় কণা,
কেমন আছো সুখের ভুবনে।
আর কত নিদ্রা যাপন করবে স্বপনের তরীতে ?
নয়ন মেলে চেয়ে দেখ পৃথিবীর বাস্তব রুপকে।
নিজেকে স্বপ্ন পুরীর রাজকন্যা ভেবে
সুন্দর কে অমর্যদা করো না।
স্বপ্নের তরীতে নয়-
সুন্দর মানুষ সকল প্রেরনার উৎস্।
তাই তোমাকে বলছি স্বপ্নের ভুবনে থেকে
নিজের জীবনটাকে আর নষ্ট করো না।
বাস্তবের মুখোমুখি হও।
কণা আমি তোমাকে কতটুকু ভালোবাসি তা হয় তো
চিঠির ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।
আমি জানিনা তোমার মনের কোন এক কোনে
আমার জন্য স্থান হয়েছে কিনা,
তবে মনে রেখো
আমি যত দিন বাঁচবো ততো দিন  তোমাকে ভালোবেসে যাবো।
কণা সাতটি বসন্তে লালিত প্রেমের সুরভী দিয়ে ও
আমি বুঝতে পারলাম না।
তোমার মনের রং বুকের তুষ্ণা।
আমি চেষ্টা করি তোমাকে ভুলে থাকতে
কিন্তু আহত হৃদয় আর ক্ষত বিক্ষত হয়ে
অন্তর জ্বালাকে জ্বালিয়ে তোলে।
আমি স্থীর থাকতে পারিনা।
চিৎকার দিয়ে বলি, কণা আমি তোমাকে ভালোবাসি।
তোমার কাছে আমার প্রেমের মূল্য কত টুকু ?
কিন্তু আমি জানি,
আমার সেই বোবা চিৎকার তোমার কাছে পৌছায় না।
কণা তুমি বুঝতে পারো না।
আমার বুকের জ্বালা কি নির্মম।
তুমি শুনতে পাওনা।
আমার অন্তরের কান্নার করুন সুর।
তাইতো তুমি সুখে আছো নিজের ভুবনে।
তোমাকে দেখে মনে হয় পৃথিবীর সকল সুখ বুঝি তোমার চারি ধারে।
কোন দুঃখই তোমাকে স্পর্শ করতে পারে না।
তুমি শুধু নিজের ভুবনে মগ্ন একবার ভেবে দেখনি আমার কথা ।
আমার করুণ অবস্থা দেখে
তোমার ঠোটে ফুটে উঠেছে কৌতুহলের হাসি।
সত্যিই চমৎকার তোমার হৃদয়।
কণা জানি পৃথীবীর প্রত্যেকটি জিনিসই পরিবর্তনশীল।
নদীতে যেমন স্রোত বয়, ঠিক তেমনি মানুষের জীবনও।
মানুষের জীবন থেকে ক্ষয়ে যায় সোনালী সময়,
আর সময়ের সাথে সাথেই পরিবর্তন আসে পৃথিবীর।
তবে এই পরিবর্তনের মাঝে থেকে দু-টি ধারা বয়ে যাবে
একটি ধারায় সঞ্চিত তুমি।
আর একটি ধারাই বঞ্চিত আমি।
তার পর একদিন কোন এক গোধুলী বেলায়
ফিরে দাঁড়াবে জীবন আয়নার সামনে।
মনের মধ্যে প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠবে।
অবাক হয়ে দেখবে নিজেকে।
সেই তারুন্যে ভরা সুন্দর মূখটি কেমন যেন মলিন হয়ে গেছে।
কপালে সেই রক্তে রাঙ্গা লাল টিপটি নেই,
কোথায় যেন হারিয়ে গেছে।
খুঁজতে গিয়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলবে হৃদয়ের মাঝে।
তখন ভেসে উঠবে কত-কিছু প্রথম জীবনের কত ঘটনা দুর ঘটনা।
কিছু স্বপ্নের কথা, কিছু দুঃখের কথা।
কিছু পরিচিত মুখ কিছু অপরিচিত মুখ।
কণা সেই দিন আমার  ভালোবাসার কথা মনে করে
যদি তোমার বুক থেকে বেরিয়ে আসে কোন দীর্ঘ শ্বাস !
তবেই আমার ভালোবাসা সার্থক হবে।
কণা দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে দিয়ে-
যদি তুমি সুখের মোহনায় ছুটে যেতে চাও
তবে আমি তোমাকে বাধা দেব না ।
যা কি সব আজে বাজে কথা লিখে অযথা তোমার সময় নষ্ট করছি।
কণা আমার চিঠিটা পড়ে তোমার মনে যদি
কিঞ্চিত পরিমানে আমার জন্য ভালোবাস জন্মে,
তাহলে আমার লেখা সার্থক হবে।
শেষ লগ্নে এসে-
তোমার সুন্দর জীবন কামনা করে
আমার জীবনের সকল সুখ তোমার নামে উৎসর্গ করলাম।


ইতি
শিশির